পিছিয়ে গেল ‘স্বাধীনতা কনসার্ট’

প্রকাশিত: ১:২৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০২৫

বিনোদন ডেস্ক:

 

যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের নির্যাতিত ও অসহায় জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে পিছিয়ে দেওয়া হলো ‘স্বাধীনতা কনসার্ট’। প্রথমে ১১ এপ্রিল এ কনসার্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। পরে এক দিন পিছিয়ে এর তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১২ এপ্রিল।

এদিনও কনসার্ট হচ্ছে না বলে আয়োজক ‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’-এর পক্ষ থেকে সংবাদ বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ফাউন্ডেশনের সভাপতি শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ও সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন, গাজা ও রাফার নির্যাতিত জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে ‘স্বাধীনতা কনসার্ট’ সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগির কনসার্টের নতুন তারিখ ও সময় জানিয়ে দেওয়া হবে।

তাদের কথায়, ফিলিস্তিনে যে ভয়ংকর বর্বরতা চলছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে ইসরায়েলের বর্বরতা সত্ত্বেও বিশ্ববাসীর নির্লিপ্ত আচরণ ততধিক অমানবিক। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১১ এপ্রিল ঢাকাসহ চারটি শহরে পূর্বনির্ধারিত ‘স্বাধীনতা কনসার্ট’ এক দিন পিছিয়ে পরদিন ১২ এপ্রিল উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ইসরায়েলের মানবতাবিরোধী আগ্রাসনের প্রতিবাদে শেষমেশ এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ‘স্বাধীনতা কনসার্ট’ সাময়িক স্থগিত করেছে ‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’।

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশবাসী যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বুনে যাচ্ছে, সেই স্বপ্নের পরিধি বাড়িয়ে দিতে গত বছর বিজয় দিবসে আয়োজন করা হয় ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ কনসার্টের। যেখানে বরেণ্য ও তরুণ শিল্পী থেকে শুরু করে শীর্ষ ব্যান্ডগুলো পারফর্ম করেছিল। তার ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে ‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ দেশের চারটি শহরে একসঙ্গে বর্ণাঢ্য কনসার্টের উদ্যোগ নিয়েছিল।

২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস হলেও রোজার কারণে উদযাপন তারিখ পিছিয়ে ১১ এপ্রিল করা হয়েছিল। আয়োজকরা জানিয়েছিলেন, বিজয় দিবস উদযাপনের কনসার্টটি শুধু ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। স্বাধীনতা দিবসের আয়োজনে কিছুটা ব্যতিক্রম হচ্ছে। এবার সুরের উৎসবটি আরও বড় পরিসরে করা হবে। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, খুলনা ও বগুড়ায় একযোগে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্বাধীনতা কনসার্ট’, যার মধ্যে রাজধানী ঢাকায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আয়োজিত কনসার্টে পারফর্ম করবেন নগর বাউল তারকা জেমসসহ কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, আগুন, সেলিম চৌধুরী, মিলা, হায়দার হোসেন, মাহতিম সাকিব, জেফার, পড়শী, অনিমেষ রায়, সোহান আলী, আবরার শাহরিয়ার, আলেয়া বেগম, মিফতা জামান, ব্যান্ড ফিডব্যাক, শিরোনামহীন, পাওয়ারসার্জ, আফটার ম্যাথ ও আপেক্ষিক।

একই সময়ে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে গান শোনাবে ব্যান্ড সোলস, মাইলস, আর্ক, লালন, অ্যাশজে, সাবকনসাস, বে অব বেঙ্গল, তীরন্দাজ, মেট্রিক্যালসহ কণ্ঠশিল্পী ইমরান, সালমা, কিরণ দাস, কোনাল, চিশতি বাউল, তাসনিম আনিকা, ইথুন বাবু, ঋতুরাজ, আকলিমা মুক্তা, পরাণ আহসান, রায়হান, শুভ্র ও মৌসুমী।

অন্যদিকে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে গানে গানে স্বাধীনতা দিবসের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দিতে একে একে মঞ্চে উঠবে ব্যান্ড ওয়ারফেজ, আর্বোভাইরাস, বাংলা ফাইভ, সোনার বাংলা সার্কাস, কার্নিভাল, কাগুল, কুঁড়েঘর, বিবর্তনের সদস্যদের পাশাপাশি কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর, মনির খান, বালাম, তাহসান খান, কনা, নাসির, পলাশ, জয় শাহরিয়ার, লিজা, রুখসার রহমান ও টুনটুন বাউল। স্বাধীনতা দিবসের চতুর্থ কনসার্টটি হবে বগুড়ায়। এ জেলা শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে আয়োজিত কনসার্টে গাইবেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, কনকচাঁপা, খুরশীদ আলম, হৃদয় খান, মিজান, কর্নিয়া, আলম আরা মিনু, লুইয়া, কে ডেজ রাব্বী, মুত্তাকী হাসিব, মুহিন এবং ব্যান্ড আর্টসেল, ডিফারেন্ট টাচ, ভাইকিংস, অ্যাভয়েড রাফা, এমএনবি ও বাগধারা।

এ আয়োজন নিয়ে ‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’-এর কোষাধ্যক্ষ সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে তাদের এ আয়োজন। কারণ, ভিনদেশি সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা করে আমরা এ প্রজন্মকে জানতে দিচ্ছি না আমাদের শিকড়-সংস্কৃতি কতটা সমৃদ্ধ। শুধু আমাদের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ নয়, গুণী শিল্পীর অভাবও নেই এ দেশে; যাদের অনেকে পৃথিবীর নানা প্রান্তে গিয়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছেন। সেসব শিল্পী ও সংগীতায়োজকের সৃষ্টি আমরা তুল ধরতে চাই। একই সঙ্গে চাই, সুরেলা এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সবার মাঝে দেশপ্রেম ছড়িয়ে দিতে।’