পিরোজপুর বাস কাউন্টারে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন যাত্রীরা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
পিরোজপুর প্রতিনিধি:
স্ত্রীকে নিয়ে পিরোজপুর বরিশাল বাস কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন রফিকুল ইসলাম (৬২)। বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে পিরোজপুরে এসেছেন, বরিশাল হয়ে যাবেন ভোলায় অসুস্থ মেয়েকে দেখতে। কিন্তু দেড় ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করেছেন, কীভাবে যাবেন গন্তব্যে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বা সিএনজিতে যেতে গেলে গুনতে হবে দ্বিগুণ ভাড়া। হতাশ কণ্ঠে বললেন, এই বয়সে এতক্ষণ বসে থাকা কষ্টকর। অন্তত বিকল্প কোনো ব্যবস্থা থাকা দরকার ছিল।শুধু রফিকুল ইসলামই নন, তার মতো অনেক যাত্রী আটকে আছেন পিরোজপুর বাস কাউন্টারে। পিরোজপুর বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১৬টি রুটে বাস ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু করেন পরিবহন শ্রমিকরা। নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে পিরোজপুর-বরিশালসহ ১৬টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে রূপাতলী এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের দাবি, বাস ভাঙচুরের সময় শ্রমিকদের মারধর করা হয়েছে। এরপর তারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে ধর্মঘট শুরু করেন।
বরিশাল-খুলনা, পিরোজপুর, মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা, ঝালকাঠি, বরগুনা, নলছিটি, কুয়াকাটা, ভোলা ও আশপাশের রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এসব রুটের যাত্রীরা।
বাস কাউন্টারের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা বরিশাল বি এম কলেজের ছাত্রী মীম আক্তার (২৩) ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ বরিশালে যেতেই হবে। আমাদের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ফরম পূরণের সময় দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল ফরম পূরণের শেষ দিন। বাড়িতে ছিলাম, গিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে। এখন কীভাবে যাব সেই চিন্তা করছি।
পিরোজপুর জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক এস কে রাজিব বলেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে আমরা ধর্মঘট করছি। নিরুপায় হয়েই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ আমরা বুঝতে পারছি। আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা সমাধান হোক এবং বাস চলাচল স্বাভাবিক হোক। তবে শ্রমিকদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কাজে ফিরতে পারব না।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ঝালকাঠি রুটে এক ছাত্রীর সঙ্গে শ্রমিকদের অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ ওঠে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা রূপাতলী বাস টার্মিনালে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এরপর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বুধবার সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু করেন পরিবহন শ্রমিকরা।