পুলিশের হস্তক্ষেপে খুললো সেই রিফুয়েলিং স্টেশন, প্রধান হোতা গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২:৫৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ৬, ২০২৫

গাজীপুর প্রতিনিধি:

 

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মালিককে না পেয়ে কর্মচারীদের মারধরের পর তাদের কাছ থেকে অফিস রুমের চাবি নিয়ে খুলে নগদ পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুটে নেয় সন্ত্রাসীরা। পরে কর্মচারীদের মাধ্যমে মালিকের কাছে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর করে চলে যায়। পাশাপাশি চাঁদা না দিলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুণ দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া এবং মালিককে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।

ঘটনাটি গত মাসের ৭ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা আঞ্চলিক সড়কের উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের মৈশাইর গ্রামে এলপিজি অটোগ্যাস রিফুয়েলিং স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রিফুয়েলিং স্টেশন মালিক বাদী হয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি একই গ্রামের রতন খান প্রধান করে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৭/১৮ জনকে অভিযুক্ত করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালে মামলার প্রধান আসামী রতন খানকে (৪৯) পুলিশ গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। এর আগে বুধবার (৫ মার্চ) উপজেলার মৈশাইর থেকে কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর কাশেম গ্রেফতার করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন।

গ্রেফতার রতন খান উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের মৈশাইর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে। অন্যদিকে ব্যবসায়ী জামিল ওয়াহেদ মুহিদ ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মৈশাইর গ্রামের মৃত মোতাহার হোসেনের ছেলে এবং ওই এলাকার এলপিজি অটোগ্যাস রিফুয়েলিং স্টেশনের সত্ত্বাধীকারী ও বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন এন্ড কনভারসন ওয়ার্কসপ ওনারস এসোসিয়েশনের ঢাকা উত্তর জোনের সাবেক সভাপতি।

ওসি জানান, ঘটনার পর থেকেই আমরা রিফুয়েলিং স্টেশনের মালিককে তার প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে তাগিদ দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু তিনি নিরাপত্তাহীনার অজুহাতে তা খোলেননি। অবশেষে গত ৪ মার্চ আমি কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান স্যার, থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত)মো. আশরাফুল ইসলাম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর কাশেমকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে এসেছি। আমরা তাদের সকল নিরাপত্তার ব্যাপারে আস্বস্ত করেছি।

জানা গেছে, গত মাসের ৭ ফেব্রুয়ারির পর থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ছিল। প্রতিষ্ঠান মালিকের ভাষ্য অনুযায়ী চাহিদাকৃত চাঁদার টাকা না দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুললে তা আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় সন্ত্রাসীরা। এ জন্য নিরাপত্তাহীনতার কারণে প্রায় ১ মাস সময় ধরে বন্ধ ছিল।

প্রতিষ্ঠান মালিক ও মামলার বাদী জামিল ওয়াহেদ বলেন, রিফুয়েলিং স্টেশনটি একটু স্পর্শকাতর জায়গা। এখানে গ্যাস নিয়ে কাজ। তাছাড়া ঘটনার পর থেকে রতন খান আমাকে এবং আমার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের হুমকি-দামকি প্রদান করছিল। ম্যানেজার ভয়ে ছুটির অজুহাতে বাড়ি চলে গেছে। আমিও নিরাপত্তায়হীনতায় ভুগছিলাম প্রতিষ্ঠান খুলতে। কারণ শত্রুতা বশত কেউ কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করলে আমি একেবারে পথে বসে যেতাম। যাই হউক থানা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন আমার এখানে এসে প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে গেছে। পাশাপাশি আমার মামলার মূলহোতা রতন খানও গ্রেফতার হয়েছে।