পৃথক হত্যাকাণ্ডে ময়মনসিংহে ছেলের হাতে বাবা, চাঁদপুরে মা খুন

প্রকাশিত: ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ময়মনসিংহের ভালুকায় ছেলের হাতে বাবা এবং চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ছেলের হাতে মা খুন হয়েছেন। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ফরিদগঞ্জে এবং সন্ধ্যায় ভালুকায় পৃথক খুনের এসব খবর পাওয়া গেছে।নিহতদের মধ্যে পূর্ব ভালুকা কোনাপাড়া গ্রামের মজিবুর রহমান পান্না উপজেলার মিরকা হাসিনা বানু উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। অপরদিকে ফরিদগঞ্জে খুন হওয়া মা রানু বেগম (৫৫) উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের ইছাপুর গ্রামের বাসিন্দা।

জানা গেছে, ভালুকার মজিবুর রহমান পান্নার সঙ্গে তার ছেলে ১৮ বছর বয়সী রাব্বির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল। এরই জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে রাব্বি তার বাবা পান্নার বুকে জখম করলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান। পরে স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ভালুকা মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঘাতক রাব্বিকে আটক করা হয়েছে।অপরদিকে, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মা রানু বেগমকে খুনের পরে ছেলে রাসেল (২২) পলাতক থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সরেজমিনে গেলে নিহতের স্বামী আতর খাঁন বলেন, আমার ৩ মেয়ে ও ২ ছেলের মধ্যে রাসেল সবার ছোট। গত কয়েকদিন ধরে তাকে বিয়ে করানোর জন্য আমাদেরকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। সে আমাকেও মেরেছে। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় রান্না-বান্নার কাজ করি। আমার ছেলে দুপুর ২টা ৪৯ মিনিটে আমাকে ফোন দিয়ে বলে, মাকে কে যেন ঘরে গলাকেটে রাখছে। তখন আমি নিশ্চিত হয়েছি, আমার স্ত্রী তার সন্তানের হাতেই খুন হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ফোন কেটে সাথে সাথে আমি বাড়িতে এসে দেখি- আমার স্ত্রী রানু বেগমের লাশ বিছানায় পড়ে আছে। ছেলে রাছেল পালিয়ে গেছে। পরে আমার ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা এসে পুলিশকে খবর দেয়।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হোসাইন আহমেদ রাজন শেখ বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছি। আমি জানতে পেরেছি, নিহতের ৫ সন্তানের মধ্যে রাছেল সবার ছোট। বড় ছেলে ফারুক গত প্রায় ৫ বছর ধরে ঢাকাতে থাকে, বাবা-মায়ের খোঁজ-খবর রাখে না। বাকি ৩ মেয়ের বিয়ে হওয়ায় তারা স্বামীর বাড়িতে থাকে।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্র বলছে, রাসেল ফরিদগঞ্জ বাজারে একটি মুদি দোকানে শ্রমিকের কাজ করে। গত কয়েকদিন ধরে সে তার বাবা-মাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে তাকে বিয়ে করানোর জন্য। যদি তাকে বিয়ে না করায়, সে বাবা-মাকে খুন করে ফেলবে এমন হুমকিও দেয়। সবাই চায় সঠিক তদন্ত করে এই হত্যার বিচার হোক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল থেকে রানু বেগমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছি। তার স্বামী আতর খান ও মেয়ে শাহিনের ভাষ্য অনুযায়ী, নিজের ছোট ছেলে রাছেল এ হত্যা ঘটিয়েছে। রাছেল পলাতক রয়েছে, তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এ বিষয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন।