‘পেপারলেস ব্ল্যাক মার্কেটিং’ করছে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
প্রায় সাড়ে তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি হওয়া আদার বাজার নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদিনও মাত্রাতিরিক্ত দামে আদা বিক্রির প্রমাণ পাওয়ার পর ভ্রাম্যমাণ আদালত এটিকে ‘পেপারলেস ব্ল্যাক মার্কেটিং’ বলে মন্তব্য করেছেন।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের বাজারে অভিযান চালিয়ে গোডাউনে লুকিয়ে রাখা ১২ টন আদার সন্ধান পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। ৮৮ বস্তায় রাখা এসব আদা বেশি দামে বিক্রির জন্য মজুত করা হয়। অভিযানে আদার সর্বোচ্চ মূল্য ১২০ টাকা কেজি বেঁধে দেয়া হয়।
বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অভিযানে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম ও সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন কাফিউন নাহার।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য ও খাদ্যপণ্য নিয়ে ‘পেপারলেস ব্ল্যাক মার্কেটিং’ করছেন খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইয়ের ব্যবসায়ীরা। এটি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত চার আড়তদারকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘অভিযানে গোডাউনে লুকিয়ে রাখা ১২ টন আদার সন্ধান পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। ৮৮ বস্তায় রাখা এসব আদা বেশি দামে বিক্রির জন্য মজুদ করা হয়। অভিযানে প্রতিকেজি আদার সর্বোচ্চ মূল্য ১২০ টাকা বেঁধে দেয়া হয়।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, অভিযানে খাতুনগঞ্জের বশির মার্কেটে শাহ আমানত ট্রেডার্সে যান ভ্রাম্যমাণ আদালত। আড়তের মালিকের কাছে আদা বিক্রির কাগজ দেখতে চাইলে ওই আড়তে আদা বিক্রি হয় না বলে দাবি করেন মালিক তৈয়ব আলী।
তবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শুক্কুর আলীর পান-সুপারির গোডাউনে ৮৮ বস্তায় রাখা প্রায় ১২ টন আদার সন্ধান পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুক্কুর আলী এইসব আদা শাহ আমানত ট্রেডার্সের জানালে আদার আড়তদার তৈয়ব আলীর কারসাজি ধরা পড়ে।
এ সময় শাহ আমানত ট্রেডার্সের আদা আমদানির কাগজ দেখে ভ্রাম্যমাণ আদালত জানতে পারেন, মিয়ানমার থেকে কেজিপ্রতি ৮৪ টাকায় কেনা এসব আদা ২৩০-২৫০ টাকায় বিক্রি করছেন আড়তদার তৈয়ব আলী।
তাকে এক লাখ টাকা জরিমানার পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কেজিপ্রতি ১২০ টাকায় এসব আদা পাইকারদের কাছে বিক্রির নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শাহ আমানত ট্রেডার্সের পর খাতুনগঞ্জের একতা ট্রেডার্স, শাহাদাত ট্রেডার্স এবং মাহবুব খান সওদাগরের আড়তে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ৮০-৯০ টাকায় কেজি প্রতি আদা কিনে ২৩০-২৫০ টাকায় বিক্রির প্রমাণ মেলে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রামে ৩২ জন আমদানিকারক আড়তদার এবং ব্রোকারদের মধ্যে সিন্ডিকেট করে কেজিপ্রতি ৮০-৯০ টাকায় কেনা আদা ২৫০ টাকা পর্যন্ত পাইকারিতে বিক্রি করছেন। যা কোনোভাবেই ১২০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়।
তিনি বলেন, ‘গতকালের অভিযানে যে চারজন আড়তদারকে জরিমানা করা হয়েছে তারা আমদানিকারক আজাদ সিন্ডিকেটের লোক বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। পেপারলেস ব্ল্যাক মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে তারা আদার মূল্য বাড়িয়েছেন। আজাদ সিন্ডিকেটের আমদানি লাইসেন্স বাতিল করতে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবো।’
অভিযানে অংশ নেয়া সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন কাইফুন নাহার জানান, এ পর্যন্ত তিন লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা সঠিক পথে না এলে আরও কঠোর পন্থা অবলম্বন করবেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সূত্র-জাগোনিউজ২৪.কম।