নিজস্ব প্রতিবেদকঃ 

২৫ বছর আগে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৩ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, এতো বছর ধরে ফেলে রেখে মামলার বিচার না হওয়ায় মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ে। প্রতিটি মৃত ব্যক্তির আত্মা বিচার চায়।

পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, এ মামলার সিডি (কেইস ডকেট) পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয়, সিডি গায়েব করা হয়েছে। আদনান সিদ্দিকী ঘটনাস্থল থেকে ধরা পড়েন। তিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন তবে তা অনেকটা গা বাঁচিয়ে দেওয়ার মতো। সোহেল চৌধুরী কোনো অখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন না, অথচ তিনি খুন হলেন। ট্রাম্পস ক্লাবের ম্যানেজার বলেছেন, জেনেছি সোহেল চৌধুরী নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অথচ এ ঘটনায় আহত অপর একজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, যারা পুলিশের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদের অনেকেই মারা গেছেন। তাই তাদেরকে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। জবানবন্দি গ্রহণ করা ম্যাজিস্ট্রেটরাও আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেননি। যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তারাও পক্ষপাতদুষ্ট ও সত্য গোপনের চেষ্টা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আদনান সিদ্দিকী কয়েকজনের নাম বলেছেন নিজের গা বাঁচিয়ে। তবে যাদের নাম বলেছে তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য রিকভারি হয়নি। তারা যে সেখানে ছিল সেটা বিশ্বাস করার কারণ থাকা সত্ত্বেও যাদের নাম বলছে আদনান সিদ্দিকী তাদের মধ্যে একজনও যদি সেখানে না থাকে বা একজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে থাকে তাহলে তার ভাষ্য অনুযায়ী আসামিদের গুরুদণ্ড দেওয়া ঠিক হবে না।বৃহস্পতিবার (৯ মে) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তীর আদালত চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ ৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপর ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ ও আদনান সিদ্দিকী।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া বাকি ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দিয়েছেন।খালাস প্রাপ্তরা হলেন- তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, ফারুক আব্বাসী, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন, আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।