প্রতিষ্ঠার ৪৪ বছর পর কাউখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথম অস্ত্রোপচার, জনমনে স্বস্তি

প্রকাশিত: ৪:৫৬ অপরাহ্ণ, মে ২, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি,রাঙ্গামাটিঃ  

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৪৪ বছর পর কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু হলো অপারেশন থিয়েটার (ওটি)। থিয়েটার চালুর প্রথম দিন সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এক প্রসূতি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।ওই প্রসূতি উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের কছুখালী গ্রামের প্রুইখইউ মারমার স্ত্রী নুবাইছিং মারমা। বর্তমানে মা ও নবজাতক উভয়েই সুস্থ আছেন।

প্রুইখইউ মারমা বলেন, ‘অপারেশন থিয়েটার থেকে প্রসূতিসহ নবজাতককে হাসপাতালের কেবিনে রাখা হয়েছে। নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এখানেই প্রসূতি এবং নবজাতককে সেবা দেওয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথম অস্ত্রোপচারে প্রথম জন্ম নেওয়া শিশুটির বাবা প্রুইখইউ মারমার বলেন, ‘প্রথমে কিছুটা ভয়ে ছিলাম কারণ হাসপাতালে প্রথম সিজার এটি। সুষ্ঠুভাবে সিজার সম্পন্ন হওয়ার পর খুবই উপকৃত হয়েছি। অন্য কোথায়ও সিজার করলে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ হতো। কিন্তু হাসপাতালে ফ্রি সেবা পেয়েছি।’

কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপারেশন থিয়েটার চালু এবং সফল অপারেশনের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে পুরো উপজেলা জুড়ে যেন এক প্রকার স্বস্তি নেমে আসে।স্থানীয়রা জানান, কোন প্রসূতি মায়ের সিজারের প্রয়োজন হলে আগে রাঙ্গামাটি সদর অথবা চট্টগ্রাম যাওয়া ছাড়া বিকল্প ছিল না। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ব্যবস্থা চালু করায় কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই সিজারিয়ান সেবা পাওয়া যাবে।

জানা যায়, ১৯৭৯-৮০ সালের দিকে কাউখালী উপজেলা সদরে মোট ৬ একর ৫৬ শতক জমির উপর ১০ শয্যা বিশিষ্ট এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্থাপন করা হয়। বর্তমানে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ভবন উদ্বোধন হলেও ১০ শয্যার জনবল দিয়ে হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছে। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা থেকে প্রসূতি স্বাস্থ্য সেবায় জনবল সংকট থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন চালু ছিল না। গাইনি ডাক্তার থাকলেও অ্যানস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ থাকে না। আবার অ্যানেস্থেসিয়া থাকলে গাইনি ডাক্তার থাকতো না। চিকিৎসক ও নানা সরঞ্জামাদির অভাবে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ ছিল। বলা যায় সমন্বয়ের অভাবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এতদিনে অপারেশন থিয়েটার অচল পড়েছিল। সম্প্রতি এ সংকট সমাধান করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অপারেশন থিয়েটারটি চালু করে।

কাউখালী উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুইমি প্রু রোয়াজা বলেন, ‘অপারেশন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এখন আর রাঙ্গামাটি জেলা সদর বা চট্টগ্রামে যেতে হবে না।’ তিনি জানান, প্রথম অপারেশন কার্যক্রমে তিনিসহ এই সফল অপারেশনে ডা. মাসুদুর রহমান, ডা. নুসরাত জাহান, ডা. হ্যাপী বিশ্বাস, ডা. ইফতেখার আহম্মেদ এতে অংশগ্রহণ করেছেন। এতে একজন অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসকও ছিলেন।