প্রধানমন্ত্রীর মহাসমাবেশকে ঘিরে খণ্ড খণ্ড মিছিলে মুখরিত রংপুর নগরী
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
রংপুর প্রতিনিধি:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাসমাবেশকে ঘিরে খণ্ড খণ্ড মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠেছে রংপুর নগরী। স্লোগানমুখর রংপুরের অলিগলিতে গণমানুষের ঢল নেমেছে। বিকেলে সমাবেশ হলেও, সকাল থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ হতে শুরু করেছে রংপুর জিলা স্কুলের আশপাশ। আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে সভাস্থল নগরীর ঐতিহাসিক রংপুর জিলা স্কুল মাঠে দূর-দূরান্ত থেকে রঙিন টিশার্ট ও ক্যাপ পরিহিত নেতাকর্মীরা ঢাকঢোল পিটিয়ে আসতে শুরু করেছেন।
রংপুর বিভাগের ৫৮ উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থকদের আগমনে নগরজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। দুপুর ১২টার আগেই জনসভাস্থলসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠবে বলে দাবি আয়োজকদের। লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও রংপুরের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আসছেন দলে দলে। বাস, ট্রেন, মাইক্রো বাস, পিকআপ ভ্যান, অটোরিকশা ও সিএনজি করে আসছেন তারা। অনেকে আসছেন হেঁটেও।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর মহাসমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে রংপুর মহানগরী। বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে। নগরীর ২১টি পয়েন্টে করা হয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। এক হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে জনসভায় আসা-যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে কাজ করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
নগরীর মেডিকেল মোড় এলাকা থেকে শাপলা চত্বর এলাকা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে কোনো ভারী যানবাহন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীরা রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের নির্ধারিত পয়েন্টে যানবাহন রেখে বিভিন্ন নেতার পক্ষ থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জনসভা অভিমুখে রওনা দিচ্ছেন। একইভাবে রংপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের পুরুষ ও নারী নেতাকর্মী ও সমর্থকরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। সমাবেশ উপলক্ষে নগরীর বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও ভিড় বেড়েছে। জনসভা শুরুর আগে অনেকে সুরভি উদ্যান, চিড়িয়াখানা, চিকলি ওয়াটার পার্ক, সিটি চিকলি বিনোদন পার্কসহ বিভিন্ন জায়গায় সময় কাটাচ্ছেন। দীর্ঘদিন পর রংপুরের পীরগঞ্জের লালদীঘির পুত্রবধূ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রংপুর আগমনে আয়োজনের বিন্দুমাত্র কমতি নেই কোথাও। উজ্জ্বীবিত আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীকে ঘিওে নেতাকর্মীদের মধ্যে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের ঢেউ বইছে।
সফরসূচি অনুযায়ী, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে করে রংপুরে আসবেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ২টায় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রংপুর ক্যান্টনমেন্টের হেলিপ্যাডে অবতরণ করবে। দুপুর ২টা ৫ মিনিটে সেখান থেকে সড়কপথে রংপুর সার্কিট হাউসের উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি। সোয়া ২টার দিকে সার্কিট হাউসে পৌঁছে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর বিকেল ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাসমাবেশস্থলে পৌঁছাবেন। প্রথমে সেখানে রংপুর বিভাগের উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। সফরে রংপুরের ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের ঘোষণা দেবেন সরকারপ্রধান। মহাসমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার পর বিকেলে আবার একই পথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ রংপুরে এসেছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। এসময় তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দুটি নির্বাচনী জনসভা করেন। সাড়ে ৪ বছরের বেশি সময় পর তিনি আবার রংপুরে আসছেন। এর আগে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের জনসভায় উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই রংপুর বিভাগ, রংপুর সিটি করপোরেশন ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিশ্রুতির আলোকে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন রংপুরের পুত্রবধূ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।