প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে সংবর্ধনা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
বিশ্বজয়ের আনন্দে ভাসছে গোটা দেশ। যুবারা দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতকে হারিয়ে উড়িয়েছে বিজয় নিশান। চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে তিন উইকেটে হারিয়ে দীর্ঘ আক্ষেপে প্রলেপ বুলিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এমন জয়ে কী সংবর্ধনা প্রাপ্য আকবর-মাহমুদুলদের?
বিসিবি সংবর্ধনা দিতেই চায়, তবে সেটি ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই। আপাতত বুধবার বিকেলে আকবররা যখন জোহানেসবার্গ থেকে উড়ে এসে নামবেন ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, সেখানেই বিসিবি সভাপতি পরিচালকদের সঙ্গে নিয়ে তাদের বরণ করে নেবেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সংবর্ধনার ব্যবস্থা করবে বিসিবি। এই মুহূর্তে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান মনে করছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয় শুধু ক্রিকেট নয়, ক্রীড়াঙ্গনেরই সবচেয়ে বড় অর্জন।
নাজমুল হাসান আজ বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের ওপর কিন্তু এই দলটা না। অনেক ভালো স্কিল আছে, খেলোয়াড় আছে। ব্যক্তিগত বিষয়কে আলাদা রেখে সব সময় মনে হয়েছে টিম হয়ে খেলছে ওরা। এটা প্লাস পয়েন্ট। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ওরা জেতার জন্য খেলে। প্রতিটি বলের অ্যাকশন দেখলে মনে হয় জেতার জন্য জানটা দিয়ে দিচ্ছে। এই খেলোয়াড়দের ফিল্ডিং, ফিটনেস অসাধারণ। বয়সভিত্তিক প্রতিটি পর্যায়ে আমরা এটির ওপর জোর দিয়েছি। তরুণদের বিশ্বজয় শুধু ক্রিকেট না, ক্রীড়াঙ্গনেরই সবচেয়ে বড় অর্জন।’
বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন আকবরদের সংবর্ধনা জানানো হবে পরে, ‘ওরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করে ক্রিকেটে এসেছে। যতটুকু বুঝতে পারছি সবাই বাড়ি যেতে মুখিয়ে আছে। যত দ্রুত সম্ভব পরিবারের সাথে দেখা করতে চায়। আমরা ১২ তারিখে বিমান বন্দরে ওদের রিসিভ করবো। এরপর বিসিবিতে একসঙ্গে ডিনার করবো। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে পরে কী করা যায়, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবো। অবশ্যই তারা সংবর্ধনা পাবে।’
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে অতীতেও এসেছে দারুণ সব প্রতিভা। কেউ কেউ নিজেদের রাখতে পেরেছেন কক্ষপথে। কেউ কেউ হারিয়ে যান। বোর্ড প্রধান এসব জানেন। তাই যুবদলকে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে বলে জানালেন। তবে সেটি ১২ তারিখেই জানাবেন বলে রহস্য রেখে দিলেন, ‘এটা (বয়সভিত্তিক ধাপ শেষে হারিয়ে যাওয়া) একটা বিরাট সমস্যা। এটা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি প্রায় আড়াই বছর ধরে। কয়েকটা ছেলে খুব ভালো করল, কিন্তু ওরা তো এখনই জাতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছে না। তো এখন ওরা করবেটা কী। যদি ওদের হাই-পারফরম্যান্স ক্যাম্পে দিই, ওখানে দেখা যায় যারা জাতীয় দলে ছিল আগে বা যারা সুযোগের অপেক্ষায় আছে তারা যাচ্ছে, তরুণেরা কিন্তু ঢুকতে পারছে না। আস্তে আস্তে এই খেলোয়াড়দের হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে এবং অনেকে হারিয়ে গেছেও। সেজন্য আমরা ওদের নিয়ে পরিকল্পনা করেছি, আগে থেকেই করা আছে। কিন্তু কী করবো সেটা আজ বলব না। ওরা ১২ তারিখে ঢাকা পৌঁছালে জানাবো।’
এই সাফল্যের পেছনে বোর্ডের ভূমিকা কতটা ছিল সেটি জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি, ‘কোথায় ঘাটতি ছিল, সেটা মাথায় রেখে আমরা চিন্তা শুরু করি। এই বিশ্বকাপের দল গঠনের আগেই চিন্তা করি আলাদাভাবে কিছু করা যায় কিনা। সেই ধারাবাহিকতায় বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দল নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করি। বিদেশের কন্ডিশনে ভালো করতে পারি না। সেজন্য বাইরে অনেক বেশি ওয়ানডে খেলিয়েছি। প্রথমত এই দলটা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো সেটা আমরা জানতাম। দ্বিতীয়ত এই দলের সবচেয়ে বড় ব্যাপার যেটি ছিল শুধু ফাইনাল না, প্রত্যেকটা ম্যাচে টিম হিসেবে খেলেছে।’
গেম ডেভলপমেন্ট চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ। তার নেতৃত্বেই বয়সভিত্তিক ক্রিকেটারদের বাছাই করে অনূর্ধ্ব-১৯ দল গঠন করা হয়। নাজমুল হাসান এই সাফল্যের পেছনে সাবেক এই ক্রিকেটারের অবদানকে স্মরণ করেছেন, ‘যারাই সবচেয়ে বেশি কাজ করে এবং শুধু ক্রিকেট নিয়ে কাজ করে অন্য কোনও চিন্তা নেই তাদের নামেই বদনাম হয়। আজ আমি বলেছি বোর্ড থেকে এই সাফল্যের পেছনে কাউকে সম্মান দেওয়া হলে সেটা খালেদ মাহমুদ।’