ক্রীড়া ডেস্ক:
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান বলতেন– সাকিব আল হাসান হলেন একের ভেতর তিন। কারণ ব্যাটিং-বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংটাও ভালো করতেন বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার। বাংলাদেশ দলে তাঁর উপস্থিতি সব সময় কাম্য ছিল। বিদায়ী কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে সব সময়ই বলতেন, সাকিব থাকলে তাঁর জন্য একাদশ সাজানো সুবিধা হয়। একজন বোলার বা ব্যাটার বেশি নিয়ে খেলতে পারে দল। যদিও গত কিছুদিন ধরে খুব একটা ভালো করছিলেন না ৩৭ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডার। টেস্টে নিয়মিত খেলতেনও না। যে ম্যাচগুলোতে খেলতেন, তাঁর ওপরই থাকত স্পটলাইট। সেই সাকিবকে ছাড়া এখন থেকে টেস্ট খেলতে হবে বাংলাদেশকে।
একজন বাড়তি বোলার বা ব্যাটার বেশি নিয়ে খেলার বিলাসিতা আর থাকছে না। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জানান, সাকিবের শূন্যতা এখনই পূরণ হওয়ার নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই তো স্পিনার বেশি খেলালে ব্যাটিংলাইন ছোট হবে বলে মনে করেন তিনি। এ মুহূর্তে কিছু করারও নেই। সাকিব-উত্তর সময়ে প্রথম টেস্টে তিন স্পিনার খেলাবে বাংলাদেশ। কন্ডিশন বিবেচনায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাবু করার জন্য স্পিনই বড় অস্ত্র।
দক্ষিণ আফ্রিকা দল বাংলাদেশে টেস্ট খেলছে ৯ বছর পর। লম্বা বিরতি দিয়ে টেস্ট খেলার চ্যালেঞ্জ থাকবেই। এইডেন মার্করামরা জানেন, মিরপুরে স্পিন উইকেটে খেলতে হবে তাদের। সে কারণে অনভিজ্ঞ দল নিয়ে বাংলাদেশে এলেও স্পিন বোলিংয়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। বাংলাদেশের অধিনায়ক শান্তও সংবাদ সম্মেলনে বার্তা দিয়েছেন, স্পিন দিয়েই কাবু করবেন সফরকারীদের, ‘স্পিনারদের বাড়তি ভূমিকা তো থাকবেই, সব সময় যেটা থাকে, অতীতেও দেখেছি। অতিরিক্ত কিছু আশা করছি না। অতীতে যেভাবে বল করেছে, স্পিনাররা সেভাবেই বল করবে। প্রক্রিয়া যেন ঠিক থাকে। প্রতিটি বল যেন টিমের জন্য করি। বাড়তি কোনো কিছু চাই না স্পিনারদের কাছ থেকে। ২০ উইকেট নেওয়া প্রসেসের ব্যাপার। প্রসেস ঠিক রাখলে ভালো ফলাফল করা সম্ভব।’
তিনি জানান, সাকিবের জায়গায় দলে নেওয়া হাসান মুরাদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট পারফরম্যান্স ভালো। তাকে খেলালেও মিরপুরে ভালো করবে বলে আশা টাইগার দলপতির। তবে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে অফস্পিনার নাঈম হাসানের খেলার সুযোগ বেশি। সাকিবের অনুপস্থিতিতে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম অটোচয়েস। দক্ষিণ আফ্রিকাকে কুপোকাত করতে এ তিন স্পিনার যথেষ্ট বলে মনে করেন শান্ত।
তবে অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের শূন্যতা পূরণ করতে তাঁকে বেগ পেতে হবে বলে জানান। একাদশ সাজাতে কঠিন হচ্ছে বলে দাবি তাঁর, ‘কম্বিনেশন মেলাতে সমস্যা হচ্ছে, অস্বীকার করার কিছু নেই। এই জায়গাটা ঠিক করতে আমাদের আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। মানিয়ে নিতে হবে। যে খেলোয়াড়রা আছে, সবার সামর্থ্য আছে যার যার মতো ভূমিকা রাখার। আশা করি, সবাই সবার শতভাগ দেবে।’
মেহেদী হাসান মিরাজকেই সাকিবের বিকল্প ধরছেন তিনি, ‘এ মুহূর্তে মনে হয় না সাকিব ভাইয়ের মতো কোনো খেলোয়াড় আছে। তবে মিরাজ ভালো বিকল্প হতে পারে। টেস্ট ক্রিকেটে খুবই ভালো করছে। ব্যাটিং-বোলিং দুটিতেই। আরও উন্নতির জায়গা আছে। মিরাজও দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। গত কয়েকটি টেস্টে ওর ব্যাটিং দেখুন, আগের চেয়ে অনেক ভালো, দলকে ভালো জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে। আমি আশা করব, পরবর্তী কয়েক বছরের মধ্যে মিরাজ সাকিব ভাইয়ের জায়গাটা নিতে পারবে।’