প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারীদের দূষণের জন্য দায়ী করা হবে

প্রকাশিত: ৩:২৭ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০২৪

মোঃ সাইফুল ইসলাম 

যারা প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার করবে, তাদেরকে দূষণের জন্য দায়ী করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা উপলক্ষ্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, পৃথিবীর ১০টি নদী সবচেয়ে বেশি দূষিত, এরমধ্যে ২টি বাংলাদেশের—পদ্মা ও যমুনা। এখানে শুধু আমাদের দেশের পলিথিন ও প্লাস্টিক না, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোরও দূষণ আছে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের যে অবস্থান, তাতে এসব দূষণ আমাদের নদী হয়ে বঙ্গোপসাগরে যাচ্ছে। কাজেই আমাদের নিজস্ব দূষণ ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আসা দূষণও আছে। আমাদের ১০০ দিনের কর্মসূচিতে এক্সটেন্ডেন্ট প্রডিউসার রেসপন্সি‌বিলিটির কথা আছে। অর্থাৎ যারা প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করবে, তাদের আমরা দূষণের জন্য দায়ী করব। এজন্য তাদের একটি অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণ করে দেবো। উৎপাদন ও নকশায় কীভাবে তারা প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনবে, সেটাও বলা হবে। আমাদের ১০০ দিনের কর্মসূচিতে বলেছিলাম, চলতি মাসের মধ্যেই এ সংক্রান্ত খসড়া চূড়ান্ত করব, আমাদের সেই কাজ চলছে।

সাবের হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, ইপিআরের খসড়া বড় বড় কোম্পানি ও চেম্বারের কাছে পাঠিয়েছি। তাদের সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। আমরা যখন প্লাস্টিকের কথা বলি, সেটা ইপিআর পরবর্তী সার্কুলার ইকোনমির সঙ্গে জড়িত। আমরা ধাপে ধাপে এগোচ্ছি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের কোন কোন জায়গায় আমরা বনায়ন করতে পারি, কী কী গাছ লাগাতে পারি, তা ঠিক করতে স্থানীয় সরকার বিভাগ, পূর্ত মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মিলে আমরা একটা ছক দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি। আমরা সবুজ এলাকা হারিয়েছি, জলাশয়ও নেই। কাজেই আমরা মনে করি, নগর উন্নয়নে আমাদের যে মূল পরিকল্পনা আছে, সেটার মধ্যে এসবও নিয়ে আসতে হবে। আমরা যেটা করতে পারি, কত শতাংশ থাকতে হবে, সেটা নির্ধারণ করতে পারি।
কিন্তু বিশ্বজুড়ে যে মান আছে, সেটা বাংলাদেশে কতটুকু কার্যকর করতে পারব আমরা জানি না। ঢাকা বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর। এখানে আমরা কীভাবে সেই জায়গাটা বের করব? এরইমধ্যে আমরা কিছু কিছু কাজ শুরু করেছি। রাজউকের যে পূর্বাচল প্রকল্প আছে, সেখানে একটি বড় অংশ আমরা বনায়নের জন্য রেখে দিয়েছি—১৪০ একর ভূমি। এটা বনায়নের জন্য আলাদাভাবে রাখা হয়েছে। কিন্তু পুরো এলাকা যদি কংক্রিট হয়ে যায়, তাহলে সেখানে কোনো সুযোগ আমাদের থাকছে না।

তিনি আরও বলেন, পরিবেশগত যে ন্যূনতম চাহিদা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে আমরা মনে করি, সেটা আমরা করতে পারবো। সেটা করা না হলে ঢাকা শহর তার বাসযোগ্যতা হারাবে।

এসময় পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আনতে কৃষিতে অনেক ধরনের জেনেটিক্যালি মডিফাইড খাবার নিয়ে কাজ হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে অনেক টিকা নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে এ ক্ষেত্রে তথ্য আদান-প্রদান হচ্ছে। এগুলো যাতে নিরাপদভাবে হয়। মানুষের জনস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্য আছে, তাদের জন্য এ ধরনের কার্যক্রম আমরা কীভাবে নিরাপদ করতে পারি, এখানে যাতে কোনো অপরাধ কিংবা অনৈতিক কিছু না হতে পারে, সেজন্য আমরা একটি পলিসি করেছি।