ফরিদপুরে প্রেমিকার সঙ্গে ধরা পড়ার পর বিয়ে, বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের মধুখালীতে রাতের বেলায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েন সাগর (২২) নামের এক তরুণ। পরে স্থানীয়রা তাদের বিয়ে দিয়ে দেয়। বিয়ের পর বিষপান করেন ওই তরুণ। শুক্রবার দিবাগত রাতে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
সাগর মধুখালী উপজেলার মেগচামী ইউনিয়নের চরবামুন্দি গ্রামের কাশেম মোল্লার ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করতেন। তার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্যের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৩ বছরের মেয়ের সঙ্গে প্রায় এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন সাগর।
গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা দুজন দেখা করতে গেলে স্থানীয়রা ধরে ফেলে। খবর পেয়ে উভয় পরিবারের অভিভাবক ও স্থানীয়রা সেখানে হাজির হন। এরপর বিচার-সালিস শেষে গভীর রাতে ধর্মীয় মতে সাগরের সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ে দেওয়া হয়। পরে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে রাত ৩টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা রওশন মিয়া (৬৫) জানান, চেয়ারম্যান ও অভিভাবকরা মিলে তাদের বিয়ে দেন। তখন সাগর বলেন, ‘তোমরা জোর করে আমার বিয়ে দিতেছ, সকালে কিন্তু আর আমারে পাবান নানে।’ তখন ছেলের বাবা কাশেম বলেন, ‘আগে বিয়ে তো হোক, তারপরে দেখা যাবেনে।’
সাগরের বাবা কাশেম মোল্লা বলেন, ‘রাতে ঘুমানোর আগে ইউপি চেয়ারম্যানের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার ছেলের হাত-পা বাঁধা। শুনতে পেলাম আমার ছেলেকে ধরে বেঁধে রেখেছে।
আমি তখন চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বাদশা খানকে বলি, আপনারা দশজনে যেটা ভালো মনে করেন সেটাই করেন। আমার কোনো আপত্তি নেই।’
এ ব্যাপারে মেয়েটির বাবা মুন্নাফ শেখ ও তার স্ত্রী আর্জিনা বেগমের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। মেগচামী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাবির উদ্দিন শেখ বলেন, ‘পারিবারিক কলহের জের ধরে সাগর আত্মহত্যা করেছে বলে জেনেছি। তবে নিহত সাগরের সঙ্গে কারো প্রেম-বিয়ের বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানি না। আমি কোনো সালিস-দরবারও করিনি।’
মধুখালী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। যতটুকু জানতে পেরেছি সাগর নামের ওই ছেলেটির সঙ্গে ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য একজন ভাইস চেয়ারম্যানের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর জের ধরে সে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। তবে কোনো অভিযোগ পাইনি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’