ফরিদপুর প্রতিনিধি:
পূর্বশত্রুতার জেরে ফরিদপুরের নগরকান্দায় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুই দল গ্রামবাসী। দুই দিন ধরে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে মামলাটি করেন নগরকান্দা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইরানুল ইসলাম।
মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে তাদের নাম জানায়নি পুলিশ।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফর আলী বলেন, গতকাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে দুটি গ্রামে অভিযান চালায়। অভিযানের সময় অনেকে আত্মগোপনে ছিলেন। তবে অভিযানকালে এজাহারনামীয় পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আজ রোববার আদালতে সোপর্দ করা হবে। এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত আছে।
মীরাকান্দা ও সলিথা গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে কুমার নদ। নদের ওপর একটি সেতু আছে। সেই সেতুর উত্তর পাশে ফুলসূতী ইউনিয়নের সলিথা ও দক্ষিণ পাড়ে মীরাকান্দা গ্রাম অবস্থিত।
শনিবার সকালে নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতী ইউনিয়নের সলিথা গ্রামের লোকজনের সঙ্গে মীরাকান্দা গ্রামের লোকজন ঢাল, সুরকি, রামদা, ইটসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে নগরকান্দা থানার ওসি সফর আলীসহ ৬ পুলিশ সদস্য আহত হন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মীরাকান্দা এলাকায় আওয়ামী লীগের লোকজন এবং সলিথায় বিএনপির লোকজন বেশি। দীর্ঘদিন ধরে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে বিবাদ চলে আসছিল। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সেই বিবাদ আরও বাড়ে। গত শুক্রবার রাতে সলিথা মাদ্রাসায় ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ওয়াজ শুনতে যান মীরাকান্দা এলাকার লোকজন। মীরাকান্দার এক তরুণকে মারধর করেন সলিথার কয়েক তরুণ। এ নিয়ে রাতেই দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। পরের দিন শনিবার সকালে সেতু এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) আসাদুজ্জামান বলেন, পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।