
ক্রীড়া ডেস্ক:
সৌদি আরবে জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু হয়েছে পাঁচ দিন আগে। সেখানে চার দিন পর যোগ দিচ্ছেন ইতালি প্রবাসী ফাহমিদুল ইসলাম। এই ফুটবলারকে সরাসরি কন্ডিশনিং ক্যাম্পে নেওয়া হয়েছে। ফাহমিদুল চতুর্থ লিগের খেলোয়াড়, তার জন্য বিশেষ সুবিধা দিচ্ছেন কোচ। ভারতের বিপক্ষে চূড়ান্ত দলে থাকলেও থাকতে পারেন। নির্ভর করছে কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরার মর্জির ওপর। ক্যাম্প শুরু হওয়ার চার দিন পর ফাহমিদুল যোগ দিয়েছেন। তাকে রীতিমত জামাই আদরে বরণ করে নিয়েছেন হেড কোচ কাবরেরা, সহকারি কোচ, ম্যানেজার আমের খান। অথচ বাংলাদেশের স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন একটু দেরি করায় তাকে জাতীয় দল থেকেই বাদ দিয়েছিলেন কাবরেরা। ২০২২ সালে জাতীয় দলের ক্যাম্প ডেকে ছিলেন কোচ। জীবন তখন জাতীয় দলে নিয়মিত। তিনি ছিলেন গ্রামের বাড়িতে। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ব্যবস্থায় সমস্যা হচ্ছিল। বাফুফে থেকে দেরিতে ম্যাসেজ পেলেও অনুশীলন শুরু হওয়ার পরদিনই ক্যাম্প যোগ দিয়েছিলেন জীবন। কিন্তু কোচ কাবরেরা হোটেল থেকে বের করে দেন। রুমে উঠতে দেননি। জীবন বোঝানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। শৃঙ্খলার ব্যাপারে বাফুফেও তখন কোনো কথা বলেনি। সবাই ধরে নিয়েছিলেন শৃঙ্খলার ব্যাপারে আপস করেননি কোচ। সেদিনের কথা আজও ভুলেনি জীবন।
গতকাল পুরোনো বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে জীবন বলেন, ‘ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। রিপোর্টিং ছিল আজকে, আমি পরদিন এসেছি।’ সেই এক ভুলে জীবনের ক্যারিয়ার থেকে জাতীয় দলের জার্সিটা আজীবনের জন্য খুলে গেল। আর কখনো জীবনকে জাতীয় দলে ডাকা হয়নি। একটা দোষে আজীবনের জন্য দোষী হয়ে যান জীবন। রহমতগঞ্জের স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবনের কণ্ঠে আফসোস, ‘অনুশীলন ছাড়াই আট জন ফুটবলার বাদ দিলেন কোচ। দেশি ফুটবলারদের নিয়ে বিদেশি কোচের দৃষ্টিভঙ্গি যদি এমন হয় তাহলে দেশের ফুটবল এগিয়ে নেওয়া কঠিন।’ জীবন বললেন, ‘একজন ফরেন ফুটবলারের জন্য অনেক কিছু করা হয়, অথচ দেশি প্লেয়ার হলে তার দিকে নজর থাকে না। আমাদের দেশে যেসব ফরেন প্লেয়ার আসে তাদের মধ্যে এমন ফুটবলারও রয়েছেন লাথিটাও ঠিক মতো মারতে জানেন না। ক্লাবগুলো তাকে আগে নামবে, দেশি ভালো প্লেয়ার থাকলেও তাকে নামাবে না। ভাই এভাবে জীবনেও ফুটবল উন্নতি হবে না।’
হামজা চৌধুরীর খেলা সবাই দেখেছেন। ইতালী থেকে ডেকে আনা ফাহমিদুল ইসলামের খেলা কে দেখেছেন, কোথায় দেখেছেন, কখন দেখেছেন? যারা দেশের মাটিতে ক্যারিয়ার গড়ছেন, শরীরের রক্ত পানি করে দিয়ে ফুটবল খেলছেন। কাবরেরা তাদেরকে (৮ ফুটবলার) ডেকে অনুশীলন না দেখে বাদ দিয়ে দিলেন। এটা রীতিমত অপমান করে বিদায় দেয়া। হ্যাভিয়ের কাবরেরা প্রসঙ্গে জীবনের কথা, ‘লিগে ভালো খেলেছে এমন কিছু কিছু ফুটবলারকে উনার চোখে পড়ে না। বসে থাকা ফুটবলার নিয়ে দল গঠন করা হয়। মুখস্থ প্লেয়ারকে জাতীয় দলে ডাকা হয়। আমার কথা হচ্ছে ক্লাব ফুটবলে ভালো খেলবে, তারাই জাতীয় দলে ডাক পাবে।’ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া লিগের ম্যাচ খেলেননি। তিনি দলে আছেন। বসুন্ধরা কিংসের একাধিক ফুটবলার রয়েছেন যারা লিগ মৌসুমে বেঞ্চে বসে সময় কাটান, তাদের জন্য জাতীয় দলের দরজা সব সময় খোলা থাকে। লিগ ম্যাচে বসেই থাকতে হয়, কিন্তু জাতীয় দলে কিংসের বেঞ্চে প্লেয়ারকে একাদশে দিয়েছেন কোচ। এমন অনেক উদারহণ রয়েছে।