নিজস্ব প্রতিবেদক:
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সমর্থন ছিল বলে দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্রদের বীর মুক্তিসেনা উপাধি দিয়েছি। এর পরও আমাদের আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনের দোসর তকমা দেওয়া হচ্ছে, এটা খুবই দুঃখজনক। এই দলকে সংলাপেও ডাকেননি অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।’
গতকাল সোমবার রাজধানীর বনানী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আক্ষেপ করেন। জি এম কাদের বলেন, একটি চক্র জাতীয় পার্টিকে আন্দোলনের বিরোধী শক্তি হিসেবে পরিচিত করতে অপচেষ্টা করছে। অথচ জাতীয় পার্টি শুরু থেকেই আন্দোলনের পক্ষে ছিল।
গত চার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে অংশ নেয় জাপা। বিএনপিবিহীন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ২২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাসহ জাপার ৩৪ এমপি নির্বাচিত হন। রাতের ভোটখ্যাত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনেও জাপা কিছু আসনে ৯০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে বিএনপির প্রায় চার গুণ ২২ আসন পায়। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জাপাকে ২৬ আসন ছেড়েছিল আওয়ামী লীগ। গত তিন সংসদেই বিরোধী দল ছিল জাপা। এ কারণে দলটিকে ফ্যাসিবাদের দোসর বলা হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির নেতা মেরাজুল ইসলাম এবং মানিক মিয়া নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন জি এম কাদের। এ সময় জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে সমর্থন দেওয়া বিভিন্ন সংবাদ পড়ে শোনান। তিনি বলেন, ‘এসব সংবাদ আমার রক্ষাকবচ। সংসদে আন্দোলনের পক্ষে বক্তৃতা করেছি। ছাত্রদের দাবি মেনে নিতে বিবৃতি দিয়েছি। আন্দোলনে আটক ৬ সমন্বয়ককে মুক্তি দিতে দাবি জানিয়েছিলাম। জাতীয় পার্টির ভূমিকা অত্যন্ত পরিষ্কার।’
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা উচিত কিনা– প্রশ্নে জিএম কাদের বলেন, যদি দেশবিরোধী বা সন্ত্রাসী সংগঠন না হয়, তাহলে নিষিদ্ধ করা উচিত নয়। সবাই রাজনীতি করুক। নির্বাচনে জনগণ যদি প্রত্যাখ্যান করে, প্রত্যাখ্যান করুক। শেখ হাসিনা যা করেছে, এর দায়ভার সব নেতাকর্মীর ওপর পড়ে না। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড সহ্য করতে পারেননি, অনেকেই আন্দোলনের সাফল্য কামনা করেছে। আগে একটা দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হয়েছে, এখন আরেকটিকে বাদ দিয়ে সমাধান হবে না। কেউ যদি অপরাধ করে, বিচার করুন। বিচারে শাস্তি দিন। বিচারের মাধ্যমে অবিচার করবেন না।