শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার শেরপুরে অবরোধের পক্ষে-বিপক্ষের মিছিল নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শেরপুর থানার ওসিসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতরা হলেন- শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা, উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান আলী, কনস্টেবল মো. শামীম হাসান, মো. রেজাউল করিম ও আফজাল হোসেন। এছাড়া আহত বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ায় তাদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ বুধবার (১৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে শহরের হাসপাতাল রোড এলাকায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় অবরোধের সমর্থনে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এতে নেতৃত্ব দেন শেরপুর-ধুনট আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। মিছিলটি শহরের ধুনটমোড় এলাকার দিকে যাচ্ছিল। একই সময় একটি শান্তি মিছিল বের করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহজামাল সিরাজী, মুনসি সাইফুল বারী ডাবলু ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ নেতৃত্ব দেন। মিছিলটি শহরের খেজুরতলা এলাকায় পৌঁছালে অবরোধের পক্ষে-বিপক্ষে শ্লোগান হয়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষের লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এ সময় রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বলেন, আমাদের শান্তি মিছিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়েছে। ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন তারা। এতে আমি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহজামাল সিরাজী, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম খোকনসহ এগারোজন আহত হয়েছেন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, অবরোধের সমর্থনে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল করি। মিছিলটি কয়েকশ গজ যেতে না যেতে কোনো ধরনের উস্কানি ছাড়া আওয়ামী লীগের শান্তি মিছিল থেকে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। সেই সঙ্গে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের মিছিলে হামলা চালায়। আমাদের অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হন।
শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাবু কুমার সাহা বলেন, বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ও সংঘর্ষ শুরু হলে আমরা উভয়পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু বিএনপির উশৃঙ্খল নেতাকর্মী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তখন পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় সংঘর্ষ চলাকালে আমি ও পুলিশের ৫ সদস্যসহ আরও অনেকেই আহত হয়েছেন। বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনার পর থেকেই গোটা শহরজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।