বগুড়ায় মধ্যরাতে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ৪:২২ অপরাহ্ণ, মার্চ ১, ২০২৫

বগুড়া প্রতিনিধি:

 

বগুড়ার শহরতলী সাবগ্রাম মধ্যপাড়া এলাকায় গভীর রাতে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলেন- মা আনোয়ারা বেগম (৫৮) ও মেয়ে ছকিনা বেগম (৩৫)। ছকিনার প্রাক্তন স্বামী রুবেল মিয়া এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে দাবি নিহতের স্বজনদের।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বগুড়া শহরের নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া সদরের আকাশতারা এলাকার রুবেল হোসেনের সঙ্গে সাবগ্রাম মধ্যপাড়ার ছকিনা বেগমের (৩৫) বিয়ের ৭ বছর পর পারিবারিক কলহের জেরে প্রায় ১ মাস আগে তাদের বিচ্ছেদ হয়। শুক্রবার দিবাগত রাতে রুবেল তার প্রাক্তন স্ত্রী ছকিনার বাড়িতে গেলে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে রুবেল ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছকিনাকে কুপিয়ে আহত করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে ছকিনার মা আনোয়ারা বেগমকেও (৫৮) কোপানো হয়।

মা-মেয়ের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে ছকিনা ও সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আনোয়ারা বেগমের মৃত্যু হয়। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আনোয়ারা বেগম বগুড়ার সদরের সাবগ্রাম মধ্যপাড়ার মৃত নয়া মন্ডলের স্ত্রী এবং ছকিনা বেগম একই উপজেলার আকাশতারা এলাকার রুবেল হোসেনের সাবেক স্ত্রী।

নিহত ছকিনা বেগমের মামাতো ভাই রবিউল ইসলাম জানান, প্রথম স্বামীর সঙ্গে তালাক হওয়ার পর ছয় বছর আগে হাসনাপাড়া গ্রামের রুবেল মিয়ার সঙ্গে ছকিনার বিয়ে হয়। এরপর ছকিনা তার প্রথম পক্ষের সন্তান সাব্বিরকে নিয়ে বগুড়া শহরের আকাশতারা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। রুবেল মাদকাসক্ত এবং চুরির সঙ্গে জড়িত থাকায় ছকিনা তাকেও তালাক দেন। এরপর ছকিনা তার মা আনোয়ারা বেগমকে গ্রাম থেকে নিয়ে এসে আলাদা বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এক বছর আগে রুবেলের অনুরোধে ছকিনা আবারও তার সংসারে ফিরে যান। কিন্তু রুবেল তার স্বভাব পরিবর্তন না করায় ছয় মাস আগে আবারও দুজনের বিচ্ছেদ হয়।

রবিউল আরও জানান, মা-মেয়ে সাবগ্রাম দক্ষিণপাড়ায় ২ শতাংশ জায়গা কিনে সেখানে টিনের ঘর তৈরি করে বসবাস করছিলেন। এক মাস আগে ছকিনা তার প্রথম স্বামী বাদশা মিয়াকে বিয়ে করেন। বাদশা মিয়া তার গ্রামের বাড়ি সারিয়াকান্দি উপজেলার হাসনাপাড়া গ্রামে বসবাস করেন। রুবেল এ খবর জানতে পেরে ছকিনার ওপর ক্ষুব্ধ হন।

ছকিনার ছেলে সাব্বির আহম্মেদ বলেন, গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রুবেল বাড়িতে এসে তার মাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। তাকে ছেড়ে দিয়ে প্রথম স্বামীকে বিয়ে করায় তাদের মধ্যে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে সঙ্গে নিয়ে আসা রামদা দিয়ে কোপানো শুরু করেন। এ সময় তার নানি আনোয়ারা বেগম এগিয়ে গেলে তাকেও কুপিয়ে রুবেল পালিয়ে যান।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মইনুদ্দিন জানান, ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন রুবেলকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনা এখনও মামলা হয়নি।