বছিলার আরশিনগরে রাজউকের অনুমোদনহীন সারি সারি ভবন

প্রকাশিত: ৪:৪১ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২৫

নিজেস্ব প্রতিবেদক:

 

নাগরিক সুযোগ-সুবিধা রাখেননি ভবন মালিকরা, ভবনগুলোকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করে ব্যবস্থা নেবে রাজউক, ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করে অবৈধ ভবন চিহ্নিত করা হবে

রাজধানীর বছিলার আরশিনগরে গড়ে উঠেছে রাজউকের অনুমোদনহীন সারি সারি ভবন। নীতিমালার তোয়াক্কা না করে জলাশয়, কৃষিজমি, ডোবা, বাগান ও নালা ভরাট করে এই আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে। ভবন তৈরির সময় রাজউক বাধা না দেওয়ায় খেলার মাঠ, পার্ক, উদ্যান, উন্মুক্ত স্থান, কাঁচাবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রশস্ত রাস্তা, স্যুয়ারেজ, ড্রেন, পানির সংযোগসহ নাগরিক সুযোগ-সুবিধার কিছুই রাখেনি সংশ্লিষ্টরা। আছে শুধু প্লট আর প্লট, সেখানে উঠছে বহুতল ভবন। এসব ভবনে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগও দেওয়া হয়েছে। কিছু ভবনে পানির লাইনও দেওয়া হয়েছে। তবে বেশির ভাগ ভবন মালিক গভীর নলকূপ বসিয়ে পানির চাহিদা পূরণ করছেন। বিষয়টি আলোচনায় আসার পর বছিলার আশপাশের এলাকাগুলোতে ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে অবৈধ ভবনগুলো চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজউক।

নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, এখন মানুষ ভাবতে শুরু করেছে, নকশা ছাড়া ভবন করলে কিছুই হয় না। রাজউক ভাঙতে না পেরে হাজার হাজার ভবনের বৈধতা দেবে। এতে প্রতিষ্ঠানটির লোকজনের বাণিজ্য করার সুযোগ তৈরি হবে। তবে রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, অনুমোদনহীন ভবন করে কেউ পার পাবে না। অনুমোদনহীন ভবনের বিষয়ে রাজউকের যে নীতিমালা আছে সেগুলো আমরা কঠোরভাবে প্রয়োগ করব।

রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সদস্য হারুন অর রশিদ ইত্তেফাককে বলেন, বছিলাসহ কেরানীগঞ্জে ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে অনুমোদনহীন ভবনগুলো দেখা হবে। রাজউক এ এলাকার ভবন উন্নয়নের জন্য একটি নীতিমালা করছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তা উপদেষ্টা পরিষদে পাশ হবে। তিনি জানান, ঐ এলাকার ভবনগুলোকে ‘ক’, ‘খ’ এবং ‘গ’—এই তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হবে। যেসব ভবনের রাজউকের অনুমোদন নেই, কিন্তু ভবন করার যোগ্য এলাকা, সেগুলো উচ্চ জরিমানার মাধ্যমে জমি মালিকরা ভবন পাশ করাতে পারবেন। এগুলো ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত। আর যেসব ভবন একেবারেই কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেনি সেগুলোকে ‘খ’ শ্রেণিতে রাখা হয়েছে। সেগুলোর মালিকদের উচ্চ জরিমানার পাশাপাশি কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হবে। যেগুলো জলাধার ভরাট করা হয়েছে অথবা রাজউকের অনুমোদন দেওয়ার সুযোগ নেই সেগুলো ‘গ’ শ্রেণিতে রেখে পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হবে।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, রাজউক অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরও বছিলার আরশিনগর ও আশপাশে অনুমোদনহীন উঁচু উঁচু ভবন নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। ইতিমধ্যে বছিলার শাক্তায় মধুহাজী রিভারভিউ হাউজিংয়ে রাজউকের অনুমোদিত নকশাবিহীন বেশ কয়েকটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মধুহাজী রিভারভিউ হাউজিংয়ের ৫ নম্বর রোডের ৪ নম্বর প্লটে একটি ১২ তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। রাজউকের অনুমোদনবিহীন ভবনটি নির্মাণে স্থানীয় লোকজন বাধা দিলেও মধুসিটির মালিকরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-এর প্রভাব খাটিয়ে ভবন নির্মাণকাজ সমাপ্ত করে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বর্তমানে লিকু এস প্যালেসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এর পাশে নাহার করপোরেশন লিমিটেড আরেকটি ১৫ তলা ভবন নির্মাণকাজ শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা অনুমোদনহীন ভবনটির কাজ না করার জন্য ডেভেলপারকে অনুরোধ করলেও তারা কোনো তোয়াক্কা করছে না। স্থানীয় বাসিন্দারা আরশিনগর সড়কের ৫০৭ দাগ নম্বরে অবৈধভাবে অনুমোদনবিহীন ভবনটি নির্মাণে রাজউকের অথরাইজড অফিসার (৫/২) বরাবরে লিখিত আবেদন করলেও রাজউক এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

এ বিষয়ে রাজউকের প্রধান ইমারত পরিদর্শক সজল মাহমুদ ইত্তেফাককে বলেন, আমরা প্রতি মাসে অন্তত ২ বার এই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছি। এছাড়া নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই আমরা এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করব।

রাজউকের চিফ টাউন প্ল্যানার আশরাফুল ইসলাম ইত্তেফাককে এ বিষয়ে বলেন, অনুমোদনহীন ভবন করে কেউ পার পাবে না। বছিলা এবং এর আশপাশের অনুমোদনহীন ভবন নিয়ে কী করা যায় তা নিয়ে আমরা একাধিক বার সভা করেছি। ঐ এলাকায় মাইকিংও করা হয়েছে। তিনি বলেন, যেসব ভবন হয়ে গেছে সেগুলোর ইঞ্জিনিয়ারিং ইভ্যুলেশন হবে। তাদের উচ্চ হারে জরিমানা করা হবে। মালিকরা যদি মনে করে তারা ভবন করেই পার পেয়ে যাবে তাহলে তারা ভুল করছে। অনুমোদনহীন ভবনের বিষয়ে রাজউকের যে নীতিমালা আছে সেগুলো আমরা কঠোরভাবে প্রয়োগ করব।বছিলার আরশিনগরে রাজউকের অনুমোদনহীন সারি সারি ভবন

নাগরিক সুযোগ-সুবিধা রাখেননি ভবন মালিকরা, ভবনগুলোকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করে ব্যবস্থা নেবে রাজউক, ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করে অবৈধ ভবন চিহ্নিত করা হবে

রাজধানীর বছিলার আরশিনগরে গড়ে উঠেছে রাজউকের অনুমোদনহীন সারি সারি ভবন। নীতিমালার তোয়াক্কা না করে জলাশয়, কৃষিজমি, ডোবা, বাগান ও নালা ভরাট করে এই আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে। ভবন তৈরির সময় রাজউক বাধা না দেওয়ায় খেলার মাঠ, পার্ক, উদ্যান, উন্মুক্ত স্থান, কাঁচাবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রশস্ত রাস্তা, স্যুয়ারেজ, ড্রেন, পানির সংযোগসহ নাগরিক সুযোগ-সুবিধার কিছুই রাখেনি সংশ্লিষ্টরা। আছে শুধু প্লট আর প্লট, সেখানে উঠছে বহুতল ভবন। এসব ভবনে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগও দেওয়া হয়েছে। কিছু ভবনে পানির লাইনও দেওয়া হয়েছে। তবে বেশির ভাগ ভবন মালিক গভীর নলকূপ বসিয়ে পানির চাহিদা পূরণ করছেন। বিষয়টি আলোচনায় আসার পর বছিলার আশপাশের এলাকাগুলোতে ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে অবৈধ ভবনগুলো চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজউক।

নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, এখন মানুষ ভাবতে শুরু করেছে, নকশা ছাড়া ভবন করলে কিছুই হয় না। রাজউক ভাঙতে না পেরে হাজার হাজার ভবনের বৈধতা দেবে। এতে প্রতিষ্ঠানটির লোকজনের বাণিজ্য করার সুযোগ তৈরি হবে। তবে রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, অনুমোদনহীন ভবন করে কেউ পার পাবে না। অনুমোদনহীন ভবনের বিষয়ে রাজউকের যে নীতিমালা আছে সেগুলো আমরা কঠোরভাবে প্রয়োগ করব।

রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সদস্য হারুন অর রশিদ ইত্তেফাককে বলেন, বছিলাসহ কেরানীগঞ্জে ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে অনুমোদনহীন ভবনগুলো দেখা হবে। রাজউক এ এলাকার ভবন উন্নয়নের জন্য একটি নীতিমালা করছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তা উপদেষ্টা পরিষদে পাশ হবে। তিনি জানান, ঐ এলাকার ভবনগুলোকে ‘ক’, ‘খ’ এবং ‘গ’—এই তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হবে। যেসব ভবনের রাজউকের অনুমোদন নেই, কিন্তু ভবন করার যোগ্য এলাকা, সেগুলো উচ্চ জরিমানার মাধ্যমে জমি মালিকরা ভবন পাশ করাতে পারবেন। এগুলো ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত। আর যেসব ভবন একেবারেই কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেনি সেগুলোকে ‘খ’ শ্রেণিতে রাখা হয়েছে। সেগুলোর মালিকদের উচ্চ জরিমানার পাশাপাশি কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হবে। যেগুলো জলাধার ভরাট করা হয়েছে অথবা রাজউকের অনুমোদন দেওয়ার সুযোগ নেই সেগুলো ‘গ’ শ্রেণিতে রেখে পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হবে।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, রাজউক অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরও বছিলার আরশিনগর ও আশপাশে অনুমোদনহীন উঁচু উঁচু ভবন নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। ইতিমধ্যে বছিলার শাক্তায় মধুহাজী রিভারভিউ হাউজিংয়ে রাজউকের অনুমোদিত নকশাবিহীন বেশ কয়েকটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মধুহাজী রিভারভিউ হাউজিংয়ের ৫ নম্বর রোডের ৪ নম্বর প্লটে একটি ১২ তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। রাজউকের অনুমোদনবিহীন ভবনটি নির্মাণে স্থানীয় লোকজন বাধা দিলেও মধুসিটির মালিকরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-এর প্রভাব খাটিয়ে ভবন নির্মাণকাজ সমাপ্ত করে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বর্তমানে লিকু এস প্যালেসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এর পাশে নাহার করপোরেশন লিমিটেড আরেকটি ১৫ তলা ভবন নির্মাণকাজ শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা অনুমোদনহীন ভবনটির কাজ না করার জন্য ডেভেলপারকে অনুরোধ করলেও তারা কোনো তোয়াক্কা করছে না। স্থানীয় বাসিন্দারা আরশিনগর সড়কের ৫০৭ দাগ নম্বরে অবৈধভাবে অনুমোদনবিহীন ভবনটি নির্মাণে রাজউকের অথরাইজড অফিসার (৫/২) বরাবরে লিখিত আবেদন করলেও রাজউক এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

এ বিষয়ে রাজউকের প্রধান ইমারত পরিদর্শক সজল মাহমুদ ইত্তেফাককে বলেন, আমরা প্রতি মাসে অন্তত ২ বার এই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছি। এছাড়া নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই আমরা এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করব।

রাজউকের চিফ টাউন প্ল্যানার আশরাফুল ইসলাম ইত্তেফাককে এ বিষয়ে বলেন, অনুমোদনহীন ভবন করে কেউ পার পাবে না। বছিলা এবং এর আশপাশের অনুমোদনহীন ভবন নিয়ে কী করা যায় তা নিয়ে আমরা একাধিক বার সভা করেছি। ঐ এলাকায় মাইকিংও করা হয়েছে। তিনি বলেন, যেসব ভবন হয়ে গেছে সেগুলোর ইঞ্জিনিয়ারিং ইভ্যুলেশন হবে। তাদের উচ্চ হারে জরিমানা করা হবে। মালিকরা যদি মনে করে তারা ভবন করেই পার পেয়ে যাবে তাহলে তারা ভুল করছে। অনুমোদনহীন ভবনের বিষয়ে রাজউকের যে নীতিমালা আছে সেগুলো আমরা কঠোরভাবে প্রয়োগ করব।