বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা

প্রকাশিত: ৭:২৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১২, ২০২৩

এসএম দেলোয়ার হোসেন:
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ থার্টি ফার্স্ট নাইট ঘিরে রাজধানীজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হচ্ছে। এ দুটি উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থাকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণসহ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থলগুলো ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। ডিএমপির পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক সমন্বয় সভায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।


ডিএমপি জানায়, আগামী ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন ও ৩১ ডিসেম্বর ইংরেজি নববর্ষ থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ উপলক্ষ্যে ডিএমপি সদর দপ্তরে সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।


ডিএমপি কমিশনার নিউজ পোস্টকে বলেন, আগামী ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপিত হতে যাচ্ছে। এছাড়াও ইংরেজি ক্যালেন্ডারের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর দেশব্যাপী থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করা হবে। এই দুইটি বড় উৎসবকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে টিম ডিএমপি রাজধানীতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। উৎসবগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে আমরা সম্মানিত সকল নগরবাসীর কাছে সর্বাত্মক সহযোগিতা চাই ।
হাবিবুর রহমান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ছিল একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া। সেই লক্ষ্য নিয়ে একটি সংবিধান রচনা করেছিলেন তিনি। তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেভাবে অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা ধারণ, লালন ও পালন করার ব্যবস্থা করেছেন। এখানে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান হবে না।


সভায় ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস্) বিপ্লব কুমার সরকার পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সার্বিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
ওই সভায় বলা হয়েছে, বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইটে গৃহীত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে-

বড়দিনঃ
প্রত্যেকটি চার্চে ইউনিফর্মে ও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে। প্রতিটি চার্চে আর্চওয়ে দিয়ে দর্শনার্থীকে ঢুকতে দেয়া হবে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে ও ম্যানুয়ালি তল্লাশি করা হবে। অনুষ্ঠানস্থল ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। নিরাপত্তায় থাকবে ফায়ার সার্ভিস ও এ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা। চার্চ এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকবে। চার্চ এলাকায় কোন ভাসমান দোকান বা হকার বসতে দেয়া হবে না। কোন প্রকার ব্যাগ নিয়ে চার্চে আসা যাবে না।


থার্টি ফার্স্ট নাইটঃ
এছাড়ও কোন উন্মুক্ত স্থানে বা বাড়ির ছাদে কোন গান-বাজনা ও আতশবাজি ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। যে কোন ধরণের ডিজে পার্টি নিষিদ্ধ থাকবে। থার্টি ফার্স্ট নাইটে আইডি কার্ড ব্যতীত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। গাড়ি প্রবেশের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার থাকতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে শাহবাগ ও নীলক্ষেত এলাকা ব্যবহার করতে হবে।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত ওই সমন্বয় সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মোঃ আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সভায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।