জেলা প্রতিনিধি সিলেট
সিলেটের জৈন্তাপুরে বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারিতে অবাধে চলছে পাথর উত্তোলন। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে আসছে। সম্প্রতি সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে কয়েকশ শ্রমিক দিয়ে পাথর উত্তোলন করছে চক্রটি। এতে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকাটি।
পাথরখেকোরা প্রকাশ্যে তাণ্ডব চালালেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে উপজেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযোগ উঠেছে, কিছু পুলিশ সদস্যকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছে চক্রটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শতাধিক শ্রমিক দিনের বেলায় শ্রীপুর এলাকার সীমান্তের ১২৮০ নম্বর আন্তর্জাতিক পিলার এলাকা থেকে পাথর উত্তোলন করে রাংপানি (শ্রীপুর) নদীর পাশে জড়ো করছেন। পরে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে উত্তোলন করা পাথর নিয়ে যাওয়া হয় আদর্শগ্রাম ঘাটে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাথর উত্তোলনকারী এক শ্রমিক বলেন, ‘মহাজনরা পাথর উত্তোলনে করে নদীর পাশে জড়ো করেন। নৌকা প্রতি ৯০০ টাকা মজুরি দেওয়া হয় শ্রমিকদের।’জৈন্তাপুর ইউনিয়নের একজন মেম্বার বলেন, শ্রীপুর পাথর কোয়ারি সরকারিভাবে বন্ধ রয়েছে। তারপরও গত দুই বছর :ধরে একটি প্রভাবশালী চক্র সীমান্তে জিরো লাইন থেকে এবং জিরো লাইন অতিক্রম করেও পাথর উত্তোলন করছে। এ বিষয়ে কেউ কথা বলছেন না।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি পাথর উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন এরইমধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
পাথর উত্তোলনে পুলিশের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে ওসি বলেন, পাথর কোয়ারিটি একেবারে জঙ্গল এলাকায়। কয়েকদিন আগে এ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়ার পথে একটি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
জৈন্তাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফতেমা তুজ জোহরা সোনিয়া বলেন, ‘আমার কাছে তথ্য আসছে শ্রীপুর থেকে পাথর উত্তোলন হচ্ছে কিন্তু ব্যস্ততার কারণে যেতে পারিনি। আজ (রোববার) আমার ব্যাচমেট পুলিশ কর্মকর্তা (কানাইঘাট-জৈন্তাপুর সার্কেলের দায়িত্বে) সেখানে গেছেন। আমাকে যাওয়ার জন্য বলছিলেন কিন্তু আমি যেতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে শ্রীপুরের পাশে খড়মপুর এলাকায় আমি এবং ইউএনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এসময় পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়।এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এএসএম কাসেমের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি।