বাংলাদেশি বলে উচ্ছেদ, ক্ষোভে ৪ বোন ও মাকে হত্যা ভারতীয় যুবকের

প্রকাশিত: ২:৫৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

 

ভারতের লখনৌর একটি হোটেলে মা ও চার বোনকে হত্যা করেছে আরশাদ নামের এক যুবক। ভয়াবহ এই হত্যার পর নিজেই একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন তিনি। আরশাদ দাবি করেছেন, তাদেরকে নিজ বাড়ি থেকে বাংলাদেশি বলে উচ্ছেদ করেছে তাদের প্রতিবেশী ও মাফিয়ারা। তার শঙ্কা ছিল, তাকে ও তার বাবাকে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে জেলে নিয়ে তার বোনদের বিক্রি করে দিতে পারে মাফিয়ারা। এমন শঙ্কা ও ক্ষোভ থেকে তিনি মা ও বোনদের হত্যা করেছেন।

ভিডিওতে আরশাদ বলেন, “প্রতিবেশীদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে আমাদের পরিবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি আমার মা ও বোনদের হত্যা করেছি। যখন পুলিশ এ ভিডিও পাবে। তারা যেন জানে, এ ঘটনার জন্য প্রতিবেশীরা দায়ী। তারা বাড়ি দখলের জন্য আমাদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। আমরা এ নিয়ে আওয়াজ তুলেছি, কিন্তু কেউ শোনেনি। গত ১৫ দিন ধরে আমরা ফুটপাতে ঘুমাচ্ছি, ঠান্ডায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমরা চাইনি ছোট বোনেরা ঠান্ডায় কষ্ট পাক। তারা আমাদের বাড়ি দখল করেছে। কিন্তু বাড়ির দলিল আমাদের কাছে আছে।”

তিনি আরও বলেন, “রনু, আফতাব, আলিম খান, সেলিম, আরিফ, আহমেদ ও আজহার— তারা সবাই ভূমিদস্যু, তারা মেয়েদের বিক্রিও করে দেয়। তারা আমার এবং বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমার বোনদের বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। আমরা এটি চাইনি। তাই আমি তাদের শ্বাসরোধ ও কব্জি কেটে হত্যা করতে বাধ্য হয়েছি।

আরশাদ ভিডিওতে তার মা ও বোনদের মরদেহ দেখিয়ে আরও বলেন, “আমি হয়ত সকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকব না। আমরা বুদাউনের বাসিন্দা। আমরা আন্টির কাছে প্রমাণ আছে। আমরা এখানে ১৯৪৭ সাল থেকে আছি। কিন্তু তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়ায়, আমরা নাকি বাংলাদেশি।”

এরপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে বিচার চান আরশাদ। তিনি বলেন, “আমরা অনেকের কাছে গেছি, কিন্তু কেউ সাহায্য করেনি। আমার বোনরা এখন মরে যাচ্ছে। আমিও একটু পর মরে যাব। কিন্তু ভারতের কোনো পরিবার যেন এমনটি করতে বাধ্য না হয়। আমি হাতজোর করে বলছি, আমরা বেঁচে থাকতে বিচার পাইনি। কিন্তু মৃত্যুর পর বিচার নিশ্চিত করুন। তারা যেন সর্বোচ্চ শাস্তি পায়। তারা অনেক শক্তিশালী। তাদের সঙ্গে পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের সম্পর্ক আছে।”

আরশাদ বলেন, তাদের বাড়িটিতে যেন এখন একটি মন্দির তৈরি করা হয় এবং বাড়ির জিনিসপত্রগুলো কোনো এতিমখানায় দিয়ে দেওয়া হয়। এই হত্যাকাণ্ডে তার সঙ্গে তার বাবাও ছিল বলে দাবি করেছে আরশাদ। এদিকে মা-বোনদের হত্যার পর আরশাদ আত্মহত্যার ইঙ্গিত দিলেও তাকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।