বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের এআই ও সাবমেরিন নিয়ে আগ্রহ

প্রকাশিত: ১২:০০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সম্প্রতি তিনটি দেশের রাষ্ট্রদূতেরা সাক্ষাৎ করেছেন। সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অফিসকক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাদিরা সিম্পসন এবং যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফ সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হেড অব মিশন ক্লিংটন প্রবক দেশটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর সমাধান এবং তাদের নতুন সাবমেরিন ক্যাবল কানেক্টিভিটি অ্যান্ড রেজেলিয়ান্স সেন্টারের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এ দুটো প্রকল্প নিয়ে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চান। অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের এই কর্মকর্তা জানান, এআই বেইজড সলিউশন অনেকটা গুগল ট্রান্সলেটের মতো। এতে পার্বত্য অঞ্চলে আদিবাসীরা বিশেষ করে চাকমা, মারমা তাদের মাতৃভাষায় কথা বললে তা লিখিতভাবে স্ক্রিনে ভেসে উঠবে।
বিবরণ ও ব্যাখ্যা শুনে দুটি প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশের যুবসমাজ হয়। তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহী এবং পারদর্শী। এ সময় উপদেষ্টা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যুবসমাজকে অধিকতর দক্ষ করে গড়ে তুলতে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। পাশাপাশি সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে ট্রেনিং প্রদানের জন্য অস্ট্রেলিয়াকে অনুরোধ করেন।

অপরদিকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্য যৌথভাবে আইসিটি, সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি মিডিয়ার স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার বিষয়েও কথা বলেন। উভয় দেশ সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে যৌথভাবে কাজ করার ব্যাপারে সম্মত আলোচনায় সাইবার সিকিউরিটি আইনের যে ধারাগুলো নিয়ে বিতর্ক আছে সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে সেগুলো সংশোধন করা হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিস্ট সরকার ছিল তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি এবং আন্দোলনের সময় যে গণহত্যা তারা চালিয়েছে এবং এর পরিণতি সম্পর্কে বিশ্ববাসীর কাছে প্রচার করতে চাই। এ বিষয়ে আমরা যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানি যুক্তরাজ্য প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে এবং এ বিষয়ে তাদের জ্ঞানও অনেক। এই বিষয়গুলো যদি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করা যায় তাহলে আমাদের সরকার তথা দেশের মানুষ উপকৃত হবে। আইসিটি ডিভিশনে আমাদের কিছু প্রকল্প আছে যাতে তরুণদের নতুন নতুন উদ্যোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হয়। সেই প্রকল্পগুলো আরো আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। আমরা এই তরুণদের আধুনিক প্রশিক্ষণ দিতে চাই পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিংয়েও বাংলাদেশের তরুণরা ভালো করছে সে বিষয়গুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক করা প্রয়োজন। এর বাইরে এমন কিছু প্রকল্পের কথা ভাবছি-যেখানে আমাদের তরুণদের ব্যবহার করা এবং বিদেশে আমাদের যে দক্ষ জনবল আছে তাদেরকে সম্পৃক্ত করা যায়।’

হাইকমিশনার ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘বিগত সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি করেছে। আমাদের ডাটাবেজ এবং ইনফরমেশন আপ টু ডেট রাখার মাধ্যমে সেই বিষয়ে স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করছি।’

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অগ্রাধিকার বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা জানান, তিনি এমন একটি তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টর গড়ে তুলতে চান-যা দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে। সাক্ষাৎকালে অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্য হাইকমিশনের প্রতিনিধি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ডা. মো. মুশফিকুর রহমান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন উপস্থিত ছিলেন।