বাউবির শিক্ষককে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় চক্রের নারীসহ গ্রেফতার ৫

প্রকাশিত: ৮:১২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৭, ২০২৩

সাইফুল ইসলাম:

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) একজন শিক্ষককে অপহরণ করে মুক্তপণ দাবি করা চক্রের নারীসহ ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)। আজ শনিবার (৭ অক্টোবর) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন এটিইউ মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পুলিশ সুপার (অপারেশন্স) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার (৬ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর খিলগাঁও থানার দক্ষিণ বনশ্রী কাজীবাড়ী টিঅ্যান্ডটি টাওয়ার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশের এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)।

ছানোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের গ্রেফতার বিলকিস ওরফে তানিয়ার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর থেকে বিলকিস উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিসংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়াসহ বিভিন্ন অজুহাতে ফেসবুকের মাধ্যমে ভুক্তভোগী শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন। গত ৫ অক্টোবর সকালে ওই শিক্ষক তার এক ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে বনশ্রী এলাকায় যান। সেখানে অবস্থানকালে বিলকিস বাউবিতে ভর্তির বিষয়ে ওই শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে চান বলে খিলগাঁও থানার দক্ষিণ বনশ্রী দশতলা মার্কেটের সামনে ডেকে নেয়।

তিনি বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষক সেখানে গেলে তাকে বিলকিসের বাসায় যেতে বললে তিনি অনীহা প্রকাশ করেন। তখন সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা অপর আসামিদের সহযোগিতায় দক্ষিণ বনশ্রী কাজীবাড়ী টিঅ্যান্ডটি টাওয়ার এলাকার একটি বাসার ষষ্ঠতলার ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ভুক্তভোগীকে হত্যার হুমকি দিয়ে হাত-পা বেঁধে লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে মারধর করেন এবং সঙ্গে থাকা নগদ ৩ হাজার টাকা ও বিকাশ অ্যাকাউন্টে থাকা ২০ হাজার টাকা নিয়ে নেন। পরে ভুক্তভোগীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। আর এর থেকে বাঁচতে হলে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এরপর ভুক্তভোগী বাধ্য হয়ে তার বোন জামাইকে নিজের প্রয়োজনের কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দুই লাখ টাকা পাঠাতে বলেন। এসময় ভুক্তভোগীর ফোন বন্ধ থাকায় বোন জামাইয়ের সন্দেহ হয়। তিনি রাজধানীর কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। পরদিন আসামিদের নির্যাতন থেকে বাচঁতে অপহৃত ব্যক্তি নিজের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে পুনরায় ২ লাখ টাকা পাঠাতে বললে ভুক্তভোগীর বোন জামাই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দুই দফায় ৪৫ হাজার টাকা পাঠান। মুক্তিপণের টাকা পাঠানোর পরও অপহৃত ব্যক্তি ফিরে না আসায় এবং সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা আরও মুক্তিপণ দাবি করার বিষয়টি এন্টি টেরোরিজম ইউনিটকে অবহিত করেন স্বজনরা। পরে খিলগাঁও থানার দক্ষিণ বনশ্রী কাজীবাড়ী টিঅ্যান্ডটি টাওয়ার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান এটিইউ মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পুলিশ সুপার (অপারেশন্স) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।