নিজস্ব প্রতিবেদক
‘ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে লাগাতার বাংলাদেশের নাগরিক হত্যা এবং সরকারের মৌন অবস্থান এবং দেশব্যাপী আওয়ামী ক্যাডারদের নির্বিচার ধর্ষণ ও লুটপাটের প্রতিবাদে’ রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)।
বিক্ষোভ মিছিলোত্তর সমাবেশে নেতারা বলেছেন, ‘‘দেশে চলছে ‘বাকশাল-টু’ ভার্সন। এর প্রভাবে সীমান্তে নাগরিক হত্যা এবং আওয়ামী ক্যাডারদের নতুন মাত্রায় ধর্ষণ-লুটপাট চলছে।’’বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু’র নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি বিজয় নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
মিছিলের আগে সমাবেশে বক্তব্য দানকালে এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েম করার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর বিপরীতে রক্ষীবাহিনী তৈরি করেছিল। আজ আবার আওয়ামী লীগ একই কায়দায় দ্বিতীয় বাকশাল কায়েম করতে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। আজ আমার বিজিবির ভাই মারা যাচ্ছে বিএসএফের গুলিতে। মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর হামলায় নিহত হচ্ছে আমার দেশের জনগণ।’
‘এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও বিজিবির সক্ষমতা এবং দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আমরা এই সমস্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। প্রয়োজনে জনগণ আবার জীবন দেবে, কিন্তু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কোন লুটেরাদের হাতে বিকিয়ে দেওয়া হবে না।’
সমাবেশে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘সরকারি দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা অবাধ ধর্ষণ ও লুটপাট ছিল বাকশালী শাসনের ঐতিহাসিক নিদর্শন। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর তা নতুন মাত্রা লাভ করেছে। এই দুঃশাসন থেকে মুক্তি লাভের একটাই উপায় তা হলো, সর্বাত্মক ঐক্য ও সংগ্রাম।’
তিনি বলেন, ‘সময় এসেছে এখন দল মতের ঊর্ধ্বে উঠে প্রত্যেক নাগরিককে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার। কে শোষকের পক্ষে আর কে শোষিতের পক্ষে তা চিহ্নিত হয়ে গেলে লড়াইটা সহজ হয়ে যাবে।’
যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকার একটা দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। জনগণের সম্মতি ব্যতীত দেশকে শোষণ আর নির্যাতন করা যায়, কিন্তু স্বার্থ রক্ষা করা যায় না। তাই প্রতিনিয়ত ভারত এবং মিয়ানমার সীমান্তে আমাদের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হলেও এই অবৈধ বাকশালী সরকার কিছুই করতে পারছে না।’
‘বারবার আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন হওয়ার পরেও, সীমান্তে হত্যা ও গুম চালু থাকলেও এই সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি মাথা তুলে তার প্রতিবাদ করতে পারছে না। নিন্দা এবং প্রতিবাদ এখন আর যথার্থ নয়; বরং সবার মিলে জাতীয় শত্রু-মিত্র নির্ণয় করে লড়াই, সংগ্রাম জারি রাখাটা এখন সময়ের দাবি।’
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, যুবপার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্যসচিব ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি, হাদিউজ্জামান খোকন ও নারী নেত্রী সুলতানা রাজিয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
তারা বলেন; ‘ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে প্রায় একই সময় বাংলাদেশের নাগরিক নিহত হয়েছে কিন্তু সরকার নির্বিকার। সীমান্তবর্তী জনগণের নিরাপত্তায় বিজিবির কোনো কার্যকর ভূমিকা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জ্ঞানের পাদপীঠে গণধর্ষণ হচ্ছে, কিন্তু পুলিশ বা প্রশাসন সাক্ষী গোপাল হয়ে আছে! পুলিশ-বিজিবি’র অ্যাকশন শুধু বিরোধী দল দমনের জন্য। বাকশাল-টু এর প্রভাবে একমাসের মাথায় নতুন মাত্রায় ধর্ষণ ও লুটপাটের বিস্তার লাভ করেছে।’
তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘অবৈধভাবে ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের কারণে জনগণের প্রতি সরকারের জবাবদিহিতার কোনো দায় নেই। তার সব দায় বিদেশি প্রভুদের কাছে সেজন্য সরকারের পররাষ্ট্রনীতি পুরোটাই নতজানুতার নীতিতে আচ্ছন্ন।’