নিজসস প্রতিবেদকঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেছেন, বুয়েটের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠন পোস্টার লাগায়, চিকা মারে। বুয়েট প্রশাসন তাদের উৎসাহিত করে। কয়েকদিন আগের ঘটনায় প্রশাসন কোন তদন্ত ছাড়া, নোটিশ ছাড়া, নিয়মবহির্ভূতভাবে একজন শিক্ষার্থীর সিট বাতিল করে। কেন আপনারা সিট বাতিল করেছেন? কেউ আপনাদের চাপ দিয়েছে? আজকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের হাজার-হাজার নেতাকর্মী যদি চাপ দেয়, পালানোর জায়গা খুঁজে পাবেন না। মনে রাখতে হবে বাঘে ধরলে আঠারো ঘাঁ, ছাত্রলীগ ধরলে ছত্রিশ ঘাঁ।
রোববার (৩১ মার্চ) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি চালুর দাবিতে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজাহারুল কবির শয়ন।
তিনি বলেন, একটি মহল আবরার ফাহাদের ঘটনাকে উপজীব্য করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের যে আবহমান সংস্কৃতি সেই সংস্কৃতিকে বিচ্ছিন্ন করার পায়তারা করছে। এই ঘটনার পর তাড়াহুড়া করে বুয়েট প্রশাসন ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। তৎকালীন সময়ে বুয়েটের নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে আমরা চুপ থাকি। কিন্তু আমরা দেখতে পাই, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যখন বুয়েট ক্যাম্পাসে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে, তখন বাংলাদেশের আইন দ্বারা যারা নিষিদ্ধ, বিভিন্ন সময় যারা জঙ্গিবাদের সন্ত্রাসের রাজনীতির জন্য অভিযুক্ত তারা সেখানে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
শয়ন বলেন, আমরা আবরারের প্রতি সমব্যথী, আবরারের সহপাঠীদের প্রতি সমব্যথী। সেই সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার আমরা করেছি। কিন্তু আমরা দেখতে পাই শহীদ আরিফ রায়হান দ্বীপের কথা বুয়েট প্রশাসন বেমালুম ভুলে গেছে। আজকের টাঙ্গুয়ার হাওরে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয় রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র করার জন্য। তাদের রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে বুয়েট প্রশাসন চুপ থেকেছে। তাদের ক্ষেত্রে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। বুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইলে হিজবুত তাহরী সংগঠন ইমেইল পাঠায়। তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমের যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানায়। আমরা অবাক হয়ে থাকি এ ধরনের কার্যক্রমে বুয়েট প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয় না।
সমাবেশে ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, যদি কোনো অপরাধী নিজ দলের হয় তারও বিচার করেছেন শেখ হাসিনা। দেশের ইতিহাসে এমন কোনো নজির নেই যে ক্ষমতাসীন অবস্থায় নিজ দলের কাউকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। অথচ আজ আবরারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি দল রাজনীতি করছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে তারা তাদের আবেগকে পূুঁজি করে রাজনীতি করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী কাজে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে যাচ্ছে। এরা দেশ বিরোধী শক্তি।
সৈকত বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোনো শিক্ষার্থীর প্রবেশের অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি ইঞ্চিতে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগান দেওয়া লিগ্যাল। এটাতে কেউ বাধা দিলে আমরা জীবন বিলিয়ে দেব, বাধা দেওয়া সেই হাতকে গুঁড়িয়ে দেব৷
সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বাঙলা কলেজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সমবেত হন।