বান্ধবী সাঁতরে বেঁচে ফিরলেও এখনও নিখোঁজ আনিকা

প্রকাশিত: ২:৫১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবিতে আনিকা আক্তার (১৮) নামে এক শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি বান্ধবীর সঙ্গে নৌকায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। শুক্রবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভৈরবে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর নিচে মেঘনা নদীতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।আনিকা নরসিংদীর বেলাব থানার দড়িকান্দি এলাকার দারু মিয়ার মেয়ে। এবার নরসিংদী মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন আনিকা। এই ভ্রমণতরী ট্রলারডুবিতে আনিকাসহ আরও আটজন নিখোঁজ রয়েছেন।

পারিবার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বাড়ি থেকে খালার বাড়ির কথা বলে যায়। সেখান থেকে তার বান্ধবী রুবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। বান্ধবী রুবার সঙ্গে বিকেলে ভৈরবের মেঘনার ব্রিজ দেখতে যায়। মেঘনা নদীভ্রমণের জন্য আনিকা ও তার বান্ধবী রুবা ট্রলারে ওঠে। নৌকায় ভ্রমণের সময় একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় পর্যটকবাহী ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা প্রায় ২০ জন যাত্রীর মধ্যে সুবর্ণা বেগম নামে এক নারীর মরদেহ ও ১২ জনকে উদ্ধার করা হলেও পুলিশ ও তার পরিবারসহ আরও ৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

নিখোঁজ আনিকার ভাই মেহেদি হাসান বলেন, আমার বোন খালার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। সেখান থেকে তার বান্ধবী রুবার সঙ্গে ভৈরবের মেঘনা নদীতে ঘুরতে যায়। ট্রলারে নদী ভ্রমণের সময়ে হঠাৎ বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারটি ডুবে যায়। রুবা সাঁতার কেটে প্রাণে বেঁচে ফিরলেও আমার বোন ফিরতে পারেনি।

শিক্ষার্থী আনিকার বাবা দারু মিয়া বলেন, আমি জানতাম আমার মেয়ে তার খালার বাসায় গেছে। ইফতার করার পর নামাজ শেষে শুনতে পাই আমার মেয়ে নাকি মেঘনা নদীতে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হয়েছে। ঘটনার সময় তার বান্ধবী রুবা সাঁতার কেটে পাড়ে উঠে বেঁচে গেলেও আনিকা নদীতে নিখোঁজ হয়।রাতের অন্ধকারে উদ্ধারকর্মীরা কাজ করতে পারেননি, এজন্য উদ্ধারকাজ বন্ধ রাখেন তারা। শনিবার সকালে কিশোরগঞ্জ থেকে ডুবুরি দল এসে আবার উদ্ধারকাজ শুরু করে।

নিখোঁজদের উদ্ধারে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস, ভৈরব ফায়ার সার্ভিস, ভৈরব থানা এবং ভৈরব, নৌ-থানা পুলিশ কাজ করছে। নিখোঁজ যাত্রীরা হলেন- ভৈরব হাইওয়ে থানার পুলিশের কন্সটেবল সোহেল রানা (৩৫), তার স্ত্রী মৌসুমি (২৫), মেয়ে মাহমুদা (৭) ও ছেলে রায়সুল (৫), ভৈরব পৌর শহরের আমলাপাড়া এলাকার ঝন্টু দের স্ত্রী রুপা দে (৩০), তার ভাইয়ের মেয়ে আরাধ্য (১২) ও ভগ্নিপতি বেলন দে (৩৮)।

কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, একটি বালুবাহী বাল্কহেডের সঙ্গে ভ্রমণ ট্রলারের ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। আমরা জানতে পেরেছি ট্রলারটিতে প্রায় ২০ জনের মতো যাত্রী ছিল। এদের মধ্যে গতকাল ১২ জনকে উদ্ধার করা হলেও ৮জন নিখোঁজ ছিল। শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে আমাদের ফায়ার সার্ভিসের ৪ সদস্যের একটি ডুবরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে।