বাবা-মায়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত কামরান

প্রকাশিত: ৭:০৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২০

বাবা-মায়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।

সোমবার দুপুর ২ টা ২০ মিনিটে নগরীর হযরত মানিকপীর (রহ.) মাজার গুরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় দলীয় নেতাকর্মী ও স্বজনেরা চোখের জলে দীর্ঘদিনের প্রিয় ‘মেয়র সাবকে’ শেষ বিদায় জানান।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফনের আগে মানিকপীর গুরস্থানে কামরানের দ্বিতীয় জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগ ছাড়াও বিভিন্ন দলের নেতা ও প্রশাসনের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা অংশ নেন। দ্বিতীয় দফা জানাযার পর দাফনের আগে আওয়ামী লীগ ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কামরানের মরদেহ ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কামরানের জানাযায় অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. গোলাম কিবরিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কামরান রোববার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে মারা যান। এরপর অ্যাম্বুলেন্সযোগে তার মরদেহ সিলেটে নিয়ে আসা হয়। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কামরানের মরদেহ নগরীর ছড়ারপারে তার বাসায় পৌঁছলে স্বজন, দলের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী করোনার ভয় উপেক্ষা করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

নিজের বাসায় স্বাস্থ্যবিধি ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী গোসল দেওয়ার পর কামরানের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী ছড়ারপার জামে মসজিদে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জীবদ্দশায় কামরান এই মসজিদের মোতাওয়াল্লী ছিলেন। মরহুমের ভাতিজা ইমতিয়াজ আহমদ আবদান প্রথম জানাযায় ইমামতি করেন। এতে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার লোকজন অংশ নেন।

এদিকে কামরানের মরদেহ দেখতে ও জানাযায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে সোমবার সকাল থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সকালে নগরীর চৌহাট্টায় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সিলেট ইউনিট কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেন। এই সভায় পরিবারের মতামতের ভিত্তিতে আত্মীয়-স্বজনের জন্য বাসার পাশে জানাযার ব্যবস্থা করা হয়।

গত ৫ জুন ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় কামরানের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর দিন তীব্র জ্বর ও বমি হলে তাকে নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ৭ জুন কামরানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়।

সিএমএইচে কামরানকে ‘প্লাজমা থেরাপি’ দেওয়া হলে প্রাথমিকভাবে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়। তবে রোববার মধ্যরাত থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে বলে জানান তার বড় ছেলে ডা. আরমান আহমদ শিপলু। অসুস্থ বাবার সঙ্গে সার্বক্ষণিক ছিলেন ডা. শিপলু। গত ২৭ মে কামরানের স্ত্রী আসমা কামরানের করোনা শনাক্ত হয়। তিনি নিজ বাসায় আইসোলেশনে আছেন।