দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির সমাবেশে শুরু হয়েছে। সমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ বানানো হয়েছে। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে ওলামা দলের সদস্য সচিব হাফেজ মাওলানা নজরুল ইসলামের কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি। গত ৪ ফেব্রুয়ারি সমাবেশের ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে বেলা ১২টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসেন বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের নামে থাকা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে স্লোগান দেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এছাড়া সমাবেশে আরও উপস্থিত আছেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা ইসলাম, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ভোট চোর। আবেদন নিবেদনের সময় নেই। জেল ভেঙে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিয়ে আসবো। আমরা ভাসানী, শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার উত্তরসূরী। সোজা আঙুলে মুক্ত না হলে আঙুল বাঁকা করবো। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা ছাড়া ঘরে ফিরে যাবো না।’
সমাবেশে ঢাকা মহানগর বিএনপির (দক্ষিণ) সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার বলেন, ‘শেখ হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হবে। গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য রাজপথে থেকে কর্মসূচি সফল করতে হবে।’
ইশরাক হোসেন বলেন, ‘কেয়ারটেকার সরকার বাতিল করার পরই জনগণ বুঝতে পারে এই সরকারের নীলনকশা। ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের নামে জাতীয় তামাশা করা হয়েছিল। আমরা সিটি নির্বাচন ভেবেছিলাম সুষ্ঠুভাবে করবে, কিন্তু জনগণ দেখেছে নির্বাচন কীভাবে চুরি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধ করেছে। দেশের মালিকানা হবে দেশের মানুষের। আওয়ামী লীগ কখনও ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলে বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থাসহ প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে।’ তার বক্তব্যের পর থেকে নেতাকর্মীরা সাবাস-সাবাস বলে স্লোগান দেন।
তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘দেশবাসী বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। দেশের সব মানুষ দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির অপেক্ষায় আছে।’
এদিকে সমাবেশ শুরুর আগে থেকেই ফকিরাপুল থেকে নয়াপল্টনমুখী সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘অনুমতির পর বিএনপি সমাবেশ শুরু করেছে। সমাবেশ স্থলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’ নয়াপল্টন, নাইটিঙ্গেল মোড়, কাকরাইল, শান্তিনগর, ফকিরাপুল, পুরানা পল্টন মোড়ে পুলিশ দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে প্রথমে পাঁচ বছরের সাজা দেন আদালত। এরপর পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ বাতিল চেয়ে করা আপিলে সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন উচ্চ আদালত। বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে বর্তমানে ৩৩টি মামলা বিচারাধীন।