বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর অজুহাত খুঁজছে : সেতুমন্ত্রী
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
আওয়ামী লীগর সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি সিটি করপরোশন নির্বাচনে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর অজুহাত খুঁজছে।
আজ সকালে মহাখালির ব্র্যাক সেন্টারে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। নারী গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণ পরবর্তী সার্টিফিকেট বিতরণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ব্র্যাক।
‘সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জেতার জন্য সরকার সবকিছু ব্যবহার করছে’ বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা উল্টো চিত্রটাই জানি। বিএনপি’র নির্বাচনে হেরে যাবার আশঙ্কা আছে। তাই বিএনপি নির্বাচন থেকে সওে দাঁড়ানোর জন্য নানামুখি অজুহাত খুঁজছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি তথ্যপ্রমাণ দিক। কোথায় কোথায় সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন দেখছেন। সেটাতো প্রমাণ করতে হবে, তার প্রমাণ তারা দিক। দেশবাসী জানুক, শুধু মনগড়া কথা বললে তো হবে না। বিএনপি তো অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়ে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়ার মতো বক্তব্য দিলে তো হবে না। কোথায় সরকার আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে, নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে বলুক। আমি পার্টির সেক্রেটারি। একটা অফিসেও আমি আজ পর্যন্ত যাইনি। তাহলে কীভাবে প্রভাবিত হচ্ছে আমি জানি না।’
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে তার পরিবারের বিশেষ আবেদন করার ব্যাপারে তিনি বলেন, যারা বিশেষ আবেদনের কথা বলছেন, তারা আসলে আবেদন কার কাছে করবেন? আদালত নাকি সরকারের কাছে? বেগম জিয়া কিন্তু এখন আদালতের এখতিয়ারে। এখানে সহমর্মিতা-সহানুভূতির বিষয় নয়, এটা লিগ্যাল ব্যাপার। আসলে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সহমর্মিতা বা সহানুভূতির ঘাটতি নাই। কিন্তু এক্ষেত্রে সহানুভূতির কথা বলে তো আমরা আদালতকে প্রভাবিত করতে পারি না।
সিটি নির্বাচান প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজনের) বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সদ্য সমাপ্ত চট্টগ্রাম উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয় লাভ করেছেন। আবার বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতিতে বিএনপির প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। যদি ইভিএমে কারচুপি করার সুযোগ থাকে এবং নির্বাচন নিয়ে কোনো জালিয়াতি হয় তাহলে চট্টগ্রাম ও উপ-নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম কেন? সরকারের যদি এখানে খারাপ কোনো উদ্দেশ্য থাকতো তাহলে তো নির্বাচনে উপস্থিতির সংখ্যা বেড়ে যেতো। নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে এমন অভিযোগ করা যুক্তিহীন।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যতগুলো নির্বাচন ইভিএম পদ্ধতিতে হয়েছে তারা বলুক কোন জায়গায়, কখন কিভাবে নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে, একটা অন্তত উল্লেখ করুক। কোনো তথ্য প্রমাণ নেই তারা শুধু বলার জন্য বলেই যাচ্ছেন।
এর আগে নারী গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণ পরবর্তী সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, নারী গাড়িচালকেরা নিয়ম মেনে চলেন, ঠান্ডা মাথায় গাড়ি চালান। তাঁরা নেশা করেন না, দায়িত্ব পালনের সময় মোবাইল ফোনে কথাও বলেন না। তাই যত বেশি নারীচালক নিয়োগ দেওয়া হবে, সড়ক দুুর্ঘটনার ঝুঁকি ততটাই কমবে।’
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহের সভাপতিত্বে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আখতার বক্তব্য রাখেন। ব্র্যাকের প্রশাসন এবং সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক আহমেদ নাজমুল হোসাইন ‘উইমেন বিহাইন্ড দ্য হুইল ফর রোড সেফটি’ বিষয়ে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
এ সময়ে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেমবন, সাহিত্যিক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, ব্র্যাকের পরিচালক আন্না মিনজসহ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, নিরাপদ সড়ক চাই ও পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।