বিএনপি নেতা মুক্তা চৌধুরীর পর পদ হারালেন তার স্ত্রীও
চোরাই গরু দিয়ে ভূরিভোজ কাণ্ড
জামালপুর প্রতিনিধি:
চোরাই গরু দিয়ে ভূরিভোজ করার আলোচিত বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরীর পর এবার তার স্ত্রী জেলা মহিলা দলের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক লায়লা খাতুন ইতিকে দলীয় পদ থেকে সাময়কি অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তা আগামী সাত দিনের মধ্যে জেলা মহিলা দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিকট বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল জামালপুর জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক সুলতানা বেগম স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এর আগে মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরীকে দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দলের প্রথামিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
ঘটনার সাথে জড়িত স্বেচ্ছাসেবক দল জামালপুর জেলা শাখার সদস্য রতন সরদারকেও দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান এবং সাত দিনের মধ্যে জবাব প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। এই ঘটনায় সুমন মণ্ডল (৪০), কসাই বজুল প্রামাণিক (৪৫), মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরী (৪৮), মিঠু (৪০), জামিউল (৩৫), আব্দুল হাকিম (৩৫), রতন সরদার (৩৮), সুজন (৪০), বিজ্ঞ চৌধুরী (৪৫), সাজা (৫০), বাদল (৩২), ফতু মিয়ার (৪০) নামে ও অজ্ঞাত আরও ৭ থেকে ৮ জনকে আসামী করে মাদারগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন কৃষক এফাজ মণ্ডল।
উল্লেখ, সমাবেশে অংশ নেয়া কর্মী-সমর্থকদের জন্য উপজেলার দক্ষিণ কয়ড়া গ্রামে ভুড়িভোজের আয়োজন করেন মাদারগঞ্জের আদারভিটা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরী এবং তার স্ত্রী জেলা মহিলা দলের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক লায়লা খাতুন ইতি। তবে ভোজের বিরিয়ানি রান্নার জন্য গত (১০ জানুয়ারি) শুক্রবার রাতে উপজেলার জোরখালী ইউনিয়নের খামারমাগুরা গ্রামের কৃষক এফাজ মণ্ডলের গোয়ালঘর থেকে একটি গরু চুরি করে জবাই করার অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে। গভীর রাতে গরু জবাই করার মত কাউকে না পেয়ে সুমন মণ্ডল (৪০), বিজ্ঞ চৌধুরী (৪৫), কসাই বজলু প্রামাণিক (৪৫) ও কয়েকজন কর্মীর সহায়তায় বিএনপি নেতা মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরী নিজেই গরুটি জবাই করেন। পরে ওই গরুর মাংস দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের জন্য বিরিয়ানি রান্না করা হয় ও আংশিক মাংস রেখে দেয়া হয়।
এরপর প্রতিবেশী ও স্থানীয়দের সহায়তায় গরুর চামড়াসহ একই এলাকার কসাই বজলু প্রামাণিককে হাতেনাতে ধরে ফেলেন কৃষক এফাজ মণ্ডল। বিষয়টি জানাজানি হলে মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরী ও তার স্ত্রী লায়লা খাতুন ইতি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে কর্মী সুমন মণ্ডল ও কসাই বজলু প্রামাণিক নামে দুই জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় গরুর চামড়া ও ২০ কেজি গরুর মাংস জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।