বিজলী প্লাস মরিচ চাষে নিঝুমদ্বীপের কেফায়েতের বাজিমাত
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
জেলা প্রতিনিধি,নোয়াখালীঃ
নোয়াখালীতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে হাইব্রিড ‘বিজলী প্লাস’ জাতের মরিচ। বাম্পার ফলন ও গুণগতমান ভালো হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এই মরিচ চাষে বাদ পড়েনি নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ড হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নও।ইউটিউব দেখে কৃষক মো. কেফায়েত হোসেন মাত্র চার শতক জায়গায় বিজলী প্লাস মরিচ চাষ করে বাজিমাত করেছেন। মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচ করে তিনি এখন লাভের আশা করছেন অন্তত ৫০ হাজার টাকা। প্রথমবার মরিচের বাম্পার ফলন দেখতে ভিড় জমিয়েছেন কৃষকরা।
কেফায়েত হোসেন নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মহাজন মাঝি বাড়ির মাহফুজুল হকের ছেলে এবং একই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
জানা যায়, চারপাশে মেঘনা নদী বেষ্টিত নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ নদীর সঙ্গে সম্পৃক্ত। বংশ পরম্পরায় তারা জেলে পেশায় জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ার এলেই প্লাবিত হয় নিম্নাঞ্চল। ফলে কৃষিকাজ এ অঞ্চলে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এরপর ইউপি সদস্য কেফায়েত হোসেন একদিন ইউটিউবে বিজলী প্লাস মরিচের ফলন দেখে এই মরিচ চাষে আগ্রহী হন। চার শতক জায়গায় মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রির আশা করছেন তিনি। তাকে দেখে আগ্রহী হচ্ছেন অন্যান্য কৃষকরা।
কেফায়েত হোসেন বলেন, এ জাতের মরিচের রং, আকার আকর্ষণীয়। এর ত্বক মসৃণ, দামও তুলনামূলক কম। জমিতে মরিচ গাছের ফলন দেখে আশপাশের কৃষকরা চমকে গেছে। এত ভালো ফলন দেখে স্থানীয় কৃষকরা মরিচ চাষে আগ্রহী হচ্ছে। ইউটিউবে দেখে আমি এই মরিচ চাষ করি। বীজ ও পরিচর্যাসহ মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ফলন দেখে বোঝা যাচ্ছে কম হলেও ৫০-৬০ হাজার টাকায় মরিচ বিক্রি করতে পারব। আমার একার চেষ্টায় বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। যদি আমাদের সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেয় তাহলে অন্যান্যরাও আগ্রহী হবে। নদীর পাশাপাশি মানুষজন কৃষিতে উদ্বুদ্ধ হবে।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল মোতালব বলেন, অন্য জাতের তুলনায় বিজলী প্লাস মরিচের ফলন কম সময়ে হয়। পাশাপাশি বাজারে চাহিদা থাকায় তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি করা যায়। এমন মরিচ আমি কখনো দেখিনি। আমরা ফলন দেখে খুশি হয়েছি। আগামীতে আমরাও চাষাবাদ করব।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিন বলেন, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের চারপাশে নদী। জোয়ার হলে পুরো নিঝুমদ্বীপ তলিয়ে যায়। তখন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। লবনাক্ত পানি হওয়ায় কৃষিতে চাইলে অনেকে ভয়ে আগ্রহী হচ্ছে না। কেফায়েত হোসেন ভালো করেছেন। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে আগামীতে আরও ভালো করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নোয়াখালীর উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শহীদুল হক বলেন, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দারা মৎস্যের ওপর নির্ভরশীল হলেও দিন দিন কৃষিতে আগ্রহী হচ্ছেন। এ বছর বিজলী প্লাস মরিচে কেফায়েত হোসেনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভবিষ্যতেও একই ধারা বজায় থাকবে। আমরা দ্রুত তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। যাতে তারা মৎস্যের পাশাপাশি কৃষিতেও ভালো করতে পারে।