সেলিনা আক্তার:
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি উঠেছে। বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ‘ফোরাম’ সংগঠনটির পর্ষদ ভেঙে অন্তর্র্বতী পর্ষদ গঠন, স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে চিঠি দিয়েছে। ফোরামের মহাসচিব ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী এই চিঠি দেন।
তিনি চিঠিতে দাবি করেন, বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপের কারণে অন্যান্য বাণিজ্য সংগঠনের মতো বিজিএমইএও এক দশকের বেশি সময় ধরে স্বতন্ত্র ও গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হয়নি। ভুয়া ভোটার ও জাল ভোট প্রদান এবং বহিরাগত দলীয় সন্ত্রাসী দিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে নির্বাচন নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে।
গত মার্চের নির্বাচন নিয়ে ফোরামের মহাসচিব চিঠিতে বলেন, বিজিএমইএর নির্বাচনসংক্রান্ত নিয়মাবলি অনুসারে, ভোটারদের হালনাগাদ আয়কর রিটার্ন ও ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এই নিয়ম ভঙ্গ করে অনেককে ভোটার করা হয়েছে, যাদের ট্রেড লাইসেন্স ভুয়া ও আয়কর রিটার্ন হালনাগাদ ছিল না।
কারখানার অস্তিত্ব নেই কিংবা দীর্ঘদিন কারখানা বন্ধ ও রপ্তানি নেই, এমন ব্যক্তিদের ভোটার করা হয়েছে। রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস কারখানার মালিক নন, এমন ব্যক্তিদের ভোটার করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিজিএমইএ নির্বাচনে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, যথা ফোরাম এবং সম্মিলিত পরিষদ। তবে ফোরাম এবং বিজিএমইএর সদস্যরা সম্মিলিত পরিষদ এবং তার আওয়ামী রাজনীতির হাতে বন্দি হয়ে আছে দীর্ঘদিন। এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী ব্যক্তিরা হলেন, সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী, পলাতক ঢাকা উত্তরের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক এমপি মহিউদ্দিন ও সালাম মুর্শেদী, আওয়ামী লীগ শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান। তাদের প্রকাশ্য সমর্থন এবং অনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বিজিএমইএ রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের কেন্দ্র এবং অনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এস এম মান্নান কচির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন ছাত্র-জনতার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং আগ্রাসনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে। বিজিএমইএর বিতর্কিত সভাপতি ও পর্ষদ ভেঙে দিয়ে একটি অন্তর্র্বতীকালীন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি জানানোর পাশাপাশি বিজিএমইএর ভেতরে দুর্নীতিবাজদের তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয়েছে।