টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
মির্জাপুরে স্বল্প মহেড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই ভবনের মাঝখান দিয়ে গেছে পাকা সড়ক। এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এতে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। তাই সড়কের পাশ থেকে বিদ্যালয়টি সরানোর দাবি স্থানীয়দের।
সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল থেকে মির্জাপুরের মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার ও ছাওয়ালী বাজার হয়ে ফতেপুর বাজারে গিয়ে মিলেছে সড়কটি। সড়কের দুই পাশে বিদ্যালয়টির দুটি ভবন।
জানা গেছে, ১৯৩৮ সালে স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষানুরাগী মিলে চাটাইয়ের বেড়া দিয়ে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এখানে ১৭৩ জন শিক্ষার্থী আছে। স্বাধীনতার পর বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ হলে টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হয়। উত্তর পাশের টিনশেড ভবনে শিক্ষকদের বসার কক্ষসহ শ্রেণিকক্ষ, আর দক্ষিণ পাশের পাকা ভবনে আছে শ্রেণিকক্ষ। নলকূপ-টয়লেটও সড়কটির দক্ষিণ পাশে। এক ভবন থেকে আরেক ভবনে যাওয়া ছাড়াও টয়লেট ব্যবহার ও পানি আনার জন্য শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে দৌড়ে সড়ক পার হতে হয়।
এ সড়ক দিয়ে বাস, পিকআপ ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের ২৫-৩০টি গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এ ছাড়া দুর্গাপূজা-কালীপূজার সময় সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এ কারণে ধুলাবালুতে বিদ্যালয়ের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ধুলা যাতে না ওড়ে, সে জন্য বিদ্যালয়ের দপ্তরি পাইপের সাহায্যে পাশের মসজিদ থেকে সড়কটিতে মাঝেমধ্যে পানি দিলেও তেমন লাভ হয় না। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে মাঠ না থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারে না।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেক দিনের পুরোনো এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সার্বক্ষণিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি অন্যত্র সরিয়ে নিলে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিমুক্তভাবে লেখাপড়া করতে পারবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেন জানান, বিদ্যালয়টির সমস্যা দীর্ঘদিনের। বিচ্ছিন্নভাবে এ সমস্যা নিয়ে কথা হলেও এখনও সম্মিলিত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শারমিন সুলতানার ভাষ্য, শিক্ষকদের সব সময় শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়। টয়লেট ও নলকূপ সড়কের দক্ষিণ পাশে। তিনি বলেন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় কমপক্ষে ৩০ শতাংশ জমি লাগে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে মাত্র ৯ শতাংশ জমি আছে। তিনি এক বছর আগে এই বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু তাঁর জানা নেই। বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমি মাত্র কয়েক দিন আগে মির্জাপুরে যোগদান করেছি। ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অনেক সমস্যা নিয়ে কথা বলেছি। সবকিছু দেখতে একটু সময় লাগবে। আশা করছি, সব সমস্যাই কাটিয়ে উঠতে পারব।’