সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা পরিষদ প্রশাসন ভবনে বিলুপ্ত প্রায় একটি ফুটকি প্যাঁচা পাখি দেখা গেছে। এ ভবনের তিন তলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অফিসের সামনের পরিসংখ্যান অফিসের এক কোণায় প্যাঁচাটিকে প্রথমে দেখতে পান উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক। পরে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের খবর দিলে তারা প্যাঁচাটির ছবি তোলেন।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সারে ১০টার দিকে দেখা যায়, পরিসংখ্যান অফিসের ওয়ালের কোণায় বসে আছে প্যাঁচাটি। তখন এপাশের প্রকৌশল অফিসের সামনে থেকে অনেকে ভিড় করেন।উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, আগে অনেক প্রজাতির প্যাঁচা পাখি দেখা যেত। বিশেষ করে গ্রামে ধানের গোলা ঘরে বড় বড় প্যাঁচা থাকত। লোকজন লক্ষ্মী প্যাঁচা বলে ডাকত।
তাড়াশ পৌর এলাকার আসানবাড়ী গ্রামের জহুরুল তালুকদার বলেন, আমাদের ধানের গোলা ঘরে আগে সারা বছর ধান থাকত। সে ঘরে লক্ষ্মী প্যাঁচাও থাকত। গোলা ঘর ভাঙার পরে বেশ কয়েক বছর মাটির ঘরের দুইতলার বারান্দায় থেকেছে। তারপর থেকে কোথাও আর প্যাঁচা পাখিগুলো চোখে পড়ে না।
এদিকে তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মর্জিনা ইসলাম বলেন, প্যাঁচা এক প্রকার নিশাচর শিকারী পাখি। দিনের বেলায় প্যাঁচার দেখা মেলে না। বেশীরভাগ প্যাঁচা ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণি ইঁদুর ও কীটপতঙ্গ শিকার করে। কিছু প্রজাতির প্যাঁচা মাছও ধরে খায়। হঠাৎ প্যাঁচা পাখির দেখা পাওয়া যায়। এখন প্যাঁচা পাখির প্রায় সব প্রজাতিই বিলুপ্তির পথে। বিশেষ করে, ফুটকি প্যাঁচা সচারাচর চোখে পড়ে না।
স্থানীয় ‘স্বাধীন জীবন’ নামে একটি জীব বৈচিত্র প্রকৃতি সংরক্ষণ কাজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক নাছিম বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার, গাছগাছালি কমে যাওয়া, লোকজনের নির্মম আচরণের কারণে প্যাঁচা পাখি বিলুপ্তির পথে ।উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, বন্যপ্রাণি ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখির উপর সজাগ দৃষ্টি রয়েছে বন বিভাগের। বিশেষ করে, বিলুপ্ত প্রায় প্রাণিগুলোর খোঁজ পাওয়া গেলে তা উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয় স্থলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।