খেলাধুলা ডেস্ক:
সাম্প্রতিক সময়ে নাজুক পারফরম্যান্সের কারণে প্রত্যাশার পারদ হয়তো কম, তবে বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেসব ছাপিয়ে ভালো কিছু করুক সেটাই প্রত্যাশা সবার। যদিও ঘুরে–ফিরে চোখের সামনে ভেসে উঠছে টপ অর্ডার ব্যাটারদের ধারাবাহিক ব্যর্থতা ও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হার। সর্বশেষ ভারতের বিপক্ষেও প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে ব্যাটিং ব্যর্থতায়। এমন অবস্থায় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের কাছেও বিশ্বকাপে টাইগারদের সম্ভাবনা নিয়ে মন্তব্য করা মুশকিল হয়ে পড়েছে!
ইতোমধ্যে রোববার (আজ) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর্দা উঠেছে সহ-আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ম্যাচ দিয়ে। তবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হচ্ছে ৮ জুন, ডালাসে তাদের প্রথম প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। পরবর্তীতে ১০ জুন দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৩ জুন নেদারল্যান্ডস ও ১৭ জুন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টাইগাররা গ্রুপপর্ব শেষ করবে।
ফাহিম : এখন যে অবস্থা তাতে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে নেই। যে কারণে এই মুহূর্তে (জয়) আশা করাটাও কঠিন। ভারত খুবই শক্তিশালি একটা দল। ওরা আইপিএল খেলে আসছে, এবং আইপিএলে যারা সেরা খেলোয়াড় তারাই এই দলে। সুতরাং ব্যাটিং–বোলিং বা মানসিকতায় হোক ওদের অবস্থানটা এখন অনেক ওপরে। আমরা মোটামুটি বোলিং করেছি। তারপর ওই উইকেটে রান করা সহজ নয়। মাহমুদউল্লাহ আসার পর কিছু রান হয়েছে। আমরা তাড়াতাড়ি হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম ব্যাটিংয়ে। দ্রুত উইকেট পড়েছে টপ অর্ডারের, এটা প্রতিনিয়ত হচ্ছে, ফলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। একটা ম্যাচে ভালো হয়েছে তাছাড়া সব ম্যাচেই খারাপ। আমি যে ডিমোটিভেট তা না, ভারতের বিপক্ষে এর চেয়ে ভালো আমার মনে হয় না আশা করতে পারি।
ফাহিম : সমস্যা তো বোঝা–ই যায়, লিটনের নিজের ওপর কোনো আস্থা আছে বলে মনে হয় না। নিজের ওপর আস্থা থাকাটা খুব জরুরি, সেই আস্থার অভাবটা তখনই হয়, যখন সে খেলাটা এনজয় করতে পারে না। এই লেভেলে ব্যাটিং এনজয় করার একটা ব্যাপার তো আছে। ওকে নিয়ে তো কাজ হচ্ছে, এখন কি কাজ হচ্ছে না হচ্ছে সেটা ব্যাটিং কোচরা করছে। আমি তো বলতে পারি না। কিন্তু ওকে মোটেও এখন সেভাবে ক্যাপাবল মনে হচ্ছে না।
ফাহিম : টি-টোয়েন্টি ম্যাচে পাওয়ার-প্লে জরুরি। মাত্র ২০ ওভারের খেলা, যে কারণে পাওয়ার প্লে–তে ভালো করাটা গুরুত্বপূর্ণ। পাওয়ার প্লে–তে যদি দলের অবস্থা পজিটিভ ওয়েতে না থাকে, তাহলে মিডল অর্ডারের পক্ষে স্কোরটাকে ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, খুব কঠিন। আমরা পাওয়ার প্লে–তে উইকেটও হারাই, আবার রানও করতে পারি না। সেটার চাপ পুরো ইনিংস জুড়েই থাকে।
ফাহিম : টি-টোয়েন্টিতে তিন নম্বর ব্যাটসম্যানের যে ধরনের ব্যাটিং করা দরকার, শান্ত সেটা করতে পারছে না। বেশ অনেকদিন ধরেই চোখে পড়ছে সেটা। হয়তো শান্ত নিজেও উপলব্ধি করে, সে কারণেই ও হয়তো নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার একটা চেষ্টা করে। ব্যাটিং করে… এখন যার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে স্ট্রাইকরেট ১১০, সে তো চাইলেই সেটাকে ১৩০-৪০ স্ট্রাইকরেটে উন্নীত করতে পারবে না। সে চেষ্টা হয়তো সে করে এবং করতে গিয়েই অনেক সময় ব্যর্থ হয়। আমি জানি না এর কোনো সমাধান আছে কি না।
ফাহিম : না, উইকেটে যদি সমস্যা থাকে তাহলে বাংলাদেশের দিকেই ফল আসবে। ভালো দলের সঙ্গে আমরা যখন খেলব, তখন উইকেটের সমস্যা থাকলে সেটা আমাদের জন্যই ভালো হবে। ভালো উইকেটে ভারতের বিপক্ষে খেললে জয়ের সুযোগ কম থাকবে। সেক্ষেত্রে খারাপ উইকেটে খেললে আমাদের জয়ের সুযোগটা থাকবে। উইকেটের আচরণের কারণে বড় দল বিপদে পড়তে পারে। আমার মনে হয় যে কারণে উইকেটে সমস্যা থাকলে আমাদের জন্যই ভালো।
ফাহিম : আমার মনে হয় যে গতকাল সাকিব উইকেটে সময় কাটানোর চেষ্টা করেছে। কালকের ম্যাচ নিয়ে সে খুব বেশি চিন্তা-ভাবনা করেছে বলে আমার মনে হয় না। কালকে যখন সাকিব বা মাহমুদউল্লাহ ব্যাটিং করতে গেছে তখন ম্যাচ মোটামুটি আমাদের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। আমার ধারণা কালকে সাকিব যেমন ব্যাটিং করেছে, সেটা উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ও ব্যাট-বলে কানেক্ট করার জন্য। আসল ম্যাচে যেন ভালো করতে পারে সে রকমই একটা চিন্তা ভাবনা করে সে ব্যাট করেছে।
ফাহিম : তার চোখে সমস্যা থাকলে তো ব্যাট করতে পারত না। চোখে সমস্যা থেকে থাকলে ক্রিকেটে ব্যাটিং করা সম্ভব নয়। ওই ধরনের কোনো সমস্যা নেই। কালকে লিটন খেলেছে তিন নম্বরে। নরমালি সাকিব তো পাঁচে খেলতেছে। যদি শান্ত তিনে খেলে, তাওহীদ চারে, সাকিব তো পাঁচে খেলবে তাহলে।
ফাহিম : আমাদের দলটা বোলিং ভারসাম্যে ভালো। বোলিংটা মোটামুটি ভালো, তার মানে যে আহামরি কিছু সেটাও নয়। বিশ্বের বেস্ট দলের বোলিংয়ের চেয়ে আমাদের বোলিং পিছিয়ে আছে বলব। তবে ব্যাটিংয়ের তুলনায় বোলিংটা আমরা গোছালো। তাসকিন যদি দলের সঙ্গে থাকে বোলার হিসেবে, সেটা দলকে সাহসী ও শক্তিশালী করবে। শরিফুলের ক্ষেত্রেও একই। সে যদি সুস্থ হয়ে যায়, খেলতে পারে, দলের জন্য ইতিবাচক ব্যাপার হবে।
ফাহিম : বাংলাদেশের যে অবস্থা এখন সে কারণে তারা কি করবে এটা বলা খুবই কঠিন। বাংলাদেশ খুবই আনপ্রেডিক্টেবল দল এখন। এটা বলা খুবই মুশকিল বাংলাদেশ কি করবে। বাংলাদেশ কিন্তু শুরু থেকেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে আসছে যেখানে জয়ের দেখা পেয়েছে হাতে গোণা। যে কারণে বলাটা মুশকিল, খুবই মুশকিলৃ।