ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

প্রকাশিত: ৮:১৭ অপরাহ্ণ, জুন ১৬, ২০২৩

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

শরীয়তপুরের জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় নিয়ে ব্যবসায়ীকে নির্যাতন করে ৭২ লাখ টাকার চেক নেওয়া এবং জামিন পাওয়া ৪ আসামিকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ আদেশ দেওয়া হয়। এই ঘটনায় অন্য অভিযুক্ত নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনিরের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বরখাস্তকৃত দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন শরীয়তপুরের জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ও পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদ। এর আগে ৭ জুন মোস্তাফিজুরকে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা থেকে বদলি করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছিল।

জানা যায়, ৩১ মে রাতে নাওডোবা বাজারের ব্যবসায়ী আবু জাফরকে বাড়ি থেকে থানায় তুলে নিয়ে যায় জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহমেদ। সেখানে নিয়ে নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ওই থানার ওসি শেখ মোস্তাফিজুর রহমান ৭২ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এর বিনিময়ে তাকে বলা হয়, ওই আত্মীয়দের মালিকানাধীন নাওডোবা বাজারের দুটি দোকান তার নামে লিখে দেওয়া হবে।

তবে এতে রাজি না হওয়ায় ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে (আবু জাফর) মারধর করেন। একপর্যায়ে ৭২ লাখ টাকার চেক লিখে দিতে রাজি হলে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরদিন সকালে ন্যাশনাল ব্যাংক নাওডোবা শাখায় নিজের হিসাব নম্বরের ৫টি চেকে ৭২ লাখ টাকা লিখে দেন আবু জাফর।

ব্যবসায়ীদের নির্যাতনের চিত্র আদালতের নজরে আসলে ভুক্তভোগীদের মেডিকেল প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। মেডিকেল প্রতিবেদন পাওয়ার পর ৭ জুন শরীয়তপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩–এর ৫ ধারা বিধান অনুযায়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ওসি শেখ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।

সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বরখাস্তকৃত ওসি সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এমন খবর লোক মুখে শুনেছি। কোনো আদেশ পাইনি। আমি এ ঘটনায় জড়িত নই। কেউ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগও করেননি।

শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ বদিউজ্জামান বলেন, পুলিশ সুপারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।