ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরতলীর বিরাসার মোড়ে সংঘর্ষের ঘটনায় ৯৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা দুইশো জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় আসামি হিসেবে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর নাম রয়েছে।

রোববার (১৮ আগস্ট) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. ফরহাদ রায়হান ভূইয়া মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে বাদী বিরাসার এলাকার আহত মো. সোলেমান বুধবার মামলাটির আবেদন করেন। সংঘর্ষে সোলেমানের চাচাতো ভাই একই এলাকার বাসিন্দা রাশেদ মিয়া গুলিবিদ্ধ হন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মঞ্জুর মাওলানা ওরফে ফারানি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাসুম বিল্লাহ, শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন লিটন, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নাবিল, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মিকাইল হোসেন ওরফে হিমেল, জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহসিন মোল্লা, বড় গোষ্ঠির বাবুল মিয়া, কাসেম মিয়া, নাটাই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাদ্দাম মিয়া, ছাত্রলীগ কর্মী জুবায়ের ও বিপ্লব। বাকিরা শহরতলীর বিরাসার ও খৈয়াসার এলাকার বাসিন্দা।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, আহত সোলেমান কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পতনের এক দফা দাবির আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ও কর্মসূচি অনুযায়ী বিক্ষুদ্ধ ছাত্র জনতা গত ৪ আগস্ট বেলা ১১টা থেকে ১২টার দিকে শহরতলীর বিরাসার এলাকয় শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে জড়ো হয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সন্ত্রাসীরা ককটেল, বোমা, পিস্তল ও দা নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তারা কালো একটি ব্যাগ থেকে ছাত্র জনতাকে উদ্দেশ্য করে মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ করে। বোমার আঘাতে ছাত্র জনতা ও জনসাধারণের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এক পর্যায়ে তারা কোমর থেকে পিস্তল বের করে ছাত্র জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে এলোপাথাড়ি গুলি করে। ছাত্রলীগ কর্মী সাদ্দাম পিস্তল দিয়ে গুলি করলে রাশেদ আহত হন।
এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পেট্রোল দিয়ে ২০টি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এতে ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। তারা ত্রাসের রাজত্ব করে বৈষম্যবিরোধী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় স্থানীয়রা রাশেদসহ অন্যান্য আহতদের উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাশেদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি এখনো সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন।