ভারত-পাকিস্তানকে ‘দায়িত্বশীল সমাধান’ খোঁজার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশিত: ১২:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

 

কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি, দুই পক্ষকে দায়িত্বশীল সমাধানের পথ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন। রোববার (২৭ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিলের হামলার পর প্রকাশ্যে ভারতকে সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে পাকিস্তান সম্পর্কে কোনো সরাসরি সমালোচনা করেনি। হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ দায় অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে ই-মেইলে বলেন, ‘আমরা ঘটনাটিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং একাধিক পর্যায়ে ভারত ও পাকিস্তানের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে দায়িত্বশীল সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে উৎসাহিত করে।’

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের পূর্ববর্তী মন্তব্যের পুনরুল্লেখ করে জানান, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পাশে রয়েছে এবং পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এশিয়ায় চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারত এখন যুক্তরাষ্ট্রের এক গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদারে পরিণত হয়েছে। যদিও পাকিস্তান এখনও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র, তবে ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটির গুরুত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক এবং ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের লেখক মাইকেল কুগেলম্যান রয়টার্সকে বলেন, ‘ভারত এখন পাকিস্তানের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ অংশীদার। যদি ভারত সামরিক প্রতিশোধের পথে এগোয়, তবে পাকিস্তানের জন্য তা উদ্বেগের বিষয় হবে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তখন ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে সহানুভূতি দেখাতে পারে এবং হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’

কুগেলম্যান আরও যোগ করেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজায় চলমান সংকটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কাঁধে এখন অনেক বৈশ্বিক চাপ রয়েছে। ফলে শুরুতে তারা ভারত ও পাকিস্তানকে নিজেদের মধ্যে সমাধান খুঁজে নিতে দিতে পারে।

এদিকে, সাবেক পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত এবং হাডসন ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো হুসেইন হাক্কানি মনে করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখনই পরিস্থিতি শান্ত করার বিশেষ কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।’ তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের অবিশ্বাস এবং সীমান্ত-সংক্রান্ত অভিযোগের কারণে প্রায়ই উত্তেজনা বাড়ে।

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা নেড প্রাইসের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন বিষয়টিকে গুরুত্ব দিলেও, যদি মনে হয় যে তারা সব পরিস্থিতিতে কেবল ভারতের পক্ষ নেবে, তবে তা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।