সাজ্জাদ হোসেন:
ক্ষমতার পালাবদলের পর বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদত্যাগ করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ এ পদটি ফাঁকা থাকায় প্রশাসনিক জটিলতা তৈরির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় যোগ্য ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য শিক্ষকদের থেকে ভিসি নিয়োগের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
বুধবার (২০ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
দেশের ৪২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য। এই পরিস্থিতিতে ক্লাস পরীক্ষাও ব্যাহত হচ্ছে। একই অবস্থা বিরাজ করছে অন্যান্য বেসরকারি কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে।
ভিসি নিয়োগ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, আগে যে সুবিধা ছিল, বিশেষ করে যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তাদের শিক্ষকদের একটা সংগঠন থাকে। সেখান থেকে টেনে একজনকে ভিসি বানিয়ে দেওয়া হতো। আমাদের ক্ষেত্রে তো সেই সুযোগ পাচ্ছি না। এখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষককে আমরা চিনি তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, ব্যক্তিত্ব এবং প্রশাসনিক দক্ষতার দিক থেকে যারা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য এ রকম শিক্ষকদের তালিকা তৈরি করছি। যত দ্রুত সম্ভব আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভিসি নিয়োগ দেব।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো থেকেও অনেক শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেকে আবার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে নিজে থেকে সরে যাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, দেশের বেসরকারি কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছিল। তাতে শিক্ষক নিয়োগে যে অনিয়ম হয়েছে সেটা ছিল পুঞ্জীভূত অনিয়ম। অত্যন্ত অসঙ্গত কারণে অনেককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ রকম হাজার হাজার অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। এগুলো নীতিগত সিদ্ধান্ত ছাড়া তো ঠিক করা যাবে না। তবে কথা হচ্ছে শিক্ষাঙ্গনে ভদ্রতা বজায় রাখতে হবে, বল প্রয়োগ করা যাবে না, ব্যক্তিগতভাবে অপমানিত করা যাবে।
আগের দিন কয়েকশ শিক্ষার্থীর অব্যাহত চাপ প্রয়োগের মধ্য দিয়ে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার বাকি অংশ বাতিল করে বিশেষ পদ্ধতিতে ফলপ্রকাশের উদ্যোগকে অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে আমার একার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নেই। জানিও না। বোর্ডগুলো সিদ্ধান্ত নেবে।
পরীক্ষা বাতিল করা হলো। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কালকে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। এ সম্পর্কে আমি এখনো চিন্তাও করিনি। আমার মাথায় এটা ঢুকছে না এখনও। এটা নিয়ে আমি একক কিছু করব না। বোর্ডগুলো এক্সপার্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। এইচএসসির এবার অর্ধেক পরীক্ষা হয়ে গেছে, সব মিলিয়ে তারা কী করবেন সেই সিদ্ধান্ত নেবেন। এই পরীক্ষা নিয়ে যে কোন ঘোষণা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান দেওয়ার কথা। তিনি যে ঘোষণা দিয়েছেন সেটাই ঘোষণা।
সারাদেশে শিক্ষাঙ্গনে নানা রকম বিশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যত ধরনের অন্যায় আছে আমরা সেগুলো চিহ্নিত করব। এখন তো শুরু করেছি প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায় থেকে। আমি বলব বিশৃঙ্খলা করা যাবে না। রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তন করা যাবে না।