ভূমিকম্পে বহুতল ভবন ধস, চীনা নির্বাহীকে গ্রেপ্তার করল থাইল্যান্ড
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি

ডেস্ক রিপোর্ট:
বহুতল ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় চীনা নির্বাহীকে গ্রেপ্তার করেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ড। গত মাসে দেশটিতে আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে রাজধানী ব্যাংককের ওই ভবনটি ধসে পড়েছিল এবং এই ঘটনায় বহু সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
রোববার (২০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সম্প্রতি ব্যাংককে নির্মাণাধীন একটি সুউচ্চ ভবন ভূমিকম্পে ধসে পড়ার ঘটনায় একজন চীনা নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে থাইল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ। ওই ব্যক্তি ভবনটির নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।গত ২৮ মার্চ মিয়ানমারের কেন্দ্রস্থলে ৭.৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই কম্পনের প্রভাবে ব্যাংককের ৩০ তলা বিশিষ্ট ওই ভবনটি মুহূর্তের মধ্যে ধসে পড়ে। চারপাশে ধুলোর মেঘ ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং আরও ৪৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
থাইল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী তাবি সোদসঙ জানিয়েছেন, ব্যাংককের আদালত চীন রেলওয়ে নম্বর ১০ নামের একটি কোম্পানির চারজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এদের মধ্যে তিনজন থাই এবং একজন চীনা নাগরিক। অভিযোগ রয়েছে—এই কোম্পানি থাইল্যান্ডের বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করেছে। সেই আইনে বলা আছে, কোনও কোম্পানিতে বিদেশিরা ৪৯ শতাংশের বেশি শেয়ার রাখতে পারবে না।থাই বিচার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত থাইল্যান্ডের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন বিভাগ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি হলেন ঝ্যাং নামের এক চীনা প্রতিনিধি। তিনি ওই কোম্পানিতে ৪৯ শতাংশ শেয়ারধারী। বাকি ৫১ শতাংশ শেয়ার তিনজন থাই নাগরিকের নামে থাকলেও, তদন্তকারীদের দাবি—এই থাইদের শেয়ার রাখা হয়েছিল আসলে অন্য বিদেশিদের হয়ে।
এছাড়াও তদন্তে উঠে এসেছে, ভবন নির্মাণে জাল সই ব্যবহার করা হয়েছিল এবং প্রকৌশলীদের চুক্তিতেও ভুয়া কাগজপত্র থাকতে পারে। একইসাথে দরপত্রে জালিয়াতির অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে চলতি এপ্রিল মাসেই থাই কর্মকর্তারা জানায়, ধসে পড়া ভবনটির কংক্রিটের ভেতর ব্যবহৃত লোহা বা স্টিলের মান পরীক্ষা করে দেখা গেছে—সেগুলোর অনেকটাই ছিল নিম্নমানের।
এর আগে গত ৩১ মার্চ ভবন ধসের পর পুলিশের হাতে ধরা পড়ে চারজন চীনা নাগরিক। তারা অনুমতি না নিয়েই ধসে যাওয়া ভবনটিতে ঢুকেছিলেন এবং কাগজপত্র সরাতে চাইছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চের ভয়াবহ ভূমিকম্পে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারে মোট ৩ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়। তবে ব্যাংককের মধ্যে এটি ছিল একমাত্র বড় ভবন যা সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়ে।