মনমোহন সিং : নির্বিবাদী ও প্রচারবিমুখ ব্যক্তিত্ব

প্রকাশিত: ১২:০৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মৃত্যু অবধারিত, একে ঠেকানোর সাধ্য কারও নেই। অনেক সময় অসময়ে প্রথিতযশা কারও মৃত্যু আমাদের ব্যথিত করে, সময়ের মৃত্যু সান্ত্বনা দেয়। তবে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এর ৯২ বছরে প্রয়াণ আমাদের ব্যথিত করছে, করছে স্মৃতিকাতর। একজন মানুষ সারাজীবন ধরে তার পাণ্ডিত্য দিয়ে মানুষের মঙ্গল চিন্তা করেছেন, রাষ্ট্র এবং সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তনে তার আহরিত জ্ঞানকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন।হিমালয়ের মতো উঁচু মাপের একজন মানুষ যে কতটা সাধারণ হতে পারেন, মনমোহন সিং তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। একসময় (১৯৯১-১৯৯৬) ভারতের অর্থমন্ত্রী এবং পরবর্তীতে (২০০৪-২০১৪) প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে তিনি দেশের অর্থনৈতিক পরিবর্তনে যেমন যুগান্তকারী অনেক ভূমিকা পালন করেছেন, তেমনি রাজনৈতিক জীবনের পুরোটাই ব্যক্তিগতভাবে ছিলেন সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে।

আর তাই তার মৃত্যুতে একসময়ের বিরোধী দল, যারা বর্তমানে সরকারে আসীন, সেই বিজেপি সরকার দেশে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে, এই সময় দেশের সব সরকারি অনুষ্ঠানাদি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। এসব সম্মান একজন মানুষ তার সারাজীবনে মানুষের জন্য কাজের মধ্য দিয়ে অর্জন করেছেন।

তারপরও তার মৃত্যুর শোক যেন সবার অন্তরকে ছাপিয়ে গেছে! তিনি যে কতটা সম্মানিত ছিলেন এর কিছুটা প্রমাণ মেলে তার মৃত্যুর পর প্রথম টুইটারে তার উত্তরসূরি নরেন্দ্র মোদির শোক জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে, যিনি মনমোহন সিং-কে অসাধারণ পাণ্ডিত্যের অধিকারী একজন ব্যক্তি হিসেবে তুলনা করেছেন।

মনমোহন সিং ভারতের প্রথম শিখ প্রধানমন্ত্রী। সারাজীবন শিক্ষকতা এবং অর্থনীতি নিয়ে চর্চা করা মানুষটা যে একসময় দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত মানুষ হবেন, এটা ভাবেননি কেউ। রাজনীতিবিমুখ এই মানুষকে একসময় রাজনৈতিক অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, রাজনৈতিক অনেক অপবাদ, বিশেষ করে তার সরকারের সময়ের অনেক দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে। এ সবকিছুর বিরুদ্ধে বাকরুদ্ধতাই ছিল তার জবাব।