ময়মনসিংহে যুবককে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, থানায় অভিযোগ

প্রকাশিত: ৪:৩৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:

ময়মনসিংহে আবুল বাশার নামে এক যুবককে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় ভুক্তভোগী যুবক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আবুল বাশার।

তিনি প্রথম আলো পত্রিকার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (সার্কুলেশন) হিসেবে কর্মরত। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে ময়মনসিংহ নগরীর দিঘারকান্দা বাইপাস মোড় এলাকা থেকে একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকারে আবুল বাশারকে অপহরণ করা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী জানান, গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে প্রাতিষ্ঠানিক কাজ শেষে তিনি ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ময়মনসিংহের দিঘারকান্দা বাইপাস মোড়ে অপরিচিত তিন যুবক তার কাছে যান। তাদের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ এর মধ্যে হবে। তাদের মধ্যে দুজন আবুল বাশারের সঙ্গে কথা বলে জানতে চান তিনি প্রথম আলোতে চাকরি করেন কী না। এ সময় তারা নিশ্চিত হয়ে পত্রিকা কেনার বিষয়ে কথা বলেন। অপর একজন কথা বলবে বলে তাকে একটি প্রাইভেটকারের সামনে নিয়ে যান। সেখানে প্রাইভেটকারের দরজা খুলে কথা বলার সময় কৌশলে তাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। এ সময় প্রাইভেটকারের ভেতরে চালক ছাড়া আরও এক ব্যক্তি পেছনের সিটে বসা ছিলেন। বাশারকে প্রাইভেটকারের কাছে নিয়ে যাওয়া তিনজনের দুজন কারে উঠলেও একজন ঘটনাস্থলে থেকে যান।

আবুল বাশার বলেন, প্রাইভেটকারে তুলে দুর্বৃত্তরা আমার চোখ ও হাত বেঁধে ফেলে। এ সময় তারা আমার হাত, পা, হাঁটু, মাথা ও মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে শক্ত বস্তু দিয়ে আঘাত করে জখম করে। মারধরের একপর্যায়ে গাড়িতে থাকা যুবকরা বলতে থাকে, ‘বসের অর্ডার তোরে মাইরা ফালানোর। বেশি বাইরা গেছস তোরা।’ এরপর তারা আমার পকেট ও ব্যাগ তল্লাশি করে পকেটে থাকা মানিব্যাগ নিয়ে সেখান থেকে ব্যাংকের এটিএম কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মোটরসাইকেলের কাগজপত্র, মানিব্যাগে থাকা ১৫ হাজার ৭০০ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। এ সময় ব্যাংকের এটিএম কার্ডের পাসওয়ার্ড, বিকাশ ও নগদের পাসওয়ার্ড নিলেও তাতে কোনো টাকা না থাকায় তারা আবারও আমাকে মারধর করে। একপর্যায়ে তারা বলতে থাকে, ‘তুই প্রাণে বাঁচতে চাইলে মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। না অইলে বসের অর্ডার অনুযায়ী তোরে মাইরা ফালবাম, কিডনি নিয়ে নিবাম।’ একপর্যায়ে আমি তাদের বিভিন্ন মাধ্যমে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দেই।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিপণের দুই লাখ টাকা পাওয়ার পর রাত ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের চেলেরঘাট বেইলি ব্রিজের পাশে আমাকে চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখান থেকে একজন ইজিবাইকচালক আমাকে উদ্ধার করে ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে ময়মনসিংহগামী বাসে তুলে দেন। তবে কারা এবং কী কারণে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে, তা আমি বুঝতে পারছি না।

এই বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়ে আমরা গুরুত্বসহকারে বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।