আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্টঃ
মার্চ মাসে চীনের উৎপাদন কার্যক্রম গত ১৩ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গতিতে বেড়েছে। এক বেসরকারি জরিপে বলা হয়েছে, ব্যাবসায়িক কার্যক্রমের আত্মবিশ্বাস ১১ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। দেশটির ভেতরে ও বাইরে থেকে ক্রেতাদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদনে গতি এসেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, চীনের কাইজিন/এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল ম্যানুফ্যাকচারিং পিএমআই মার্চ মাসে ৫১.১ পয়েন্ট উঠেছে, যদিও বিশ্লেষকরা ধারণা করেছিলেন, এই সূচকের মান থাকবে ৫১। আগের মাস মার্চে এই সূচকের মান ছিল ৫০.৯। এ নিয়ে টানা পাঁচ মাস চীনের উৎপাদন কার্যক্রম সম্প্রসারিত হয়েছে। এই সূচকের মান ৫০-এর ওপরে থাকলে ধরে নেওয়া হয়, উৎপাদন সম্প্রসারিত হয়েছে। নিচে থাকলে ধরে নেওয়া হয় যে উৎপাদন সংকুচিত হয়েছে।
সম্প্রতি চীনের আমদানি ও রপ্তানির পরিসংখ্যানও প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। ফলে বোঝা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির ভালো সূচনা হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের সিটি ব্যাংক ২০২৪ সালের জন্য চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪.৬ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশে উন্নীত করেছে। সাম্প্রতিক ইতিবাচক পরিসংখ্যান ও নীতি সহায়তার ভিত্তিতে তারা এই পূর্বাভাস দিয়েছে।এদিকে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চীনের সংসদের বার্ষিক অধিবেশনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং ২০২৪ সালের জন্য প্রবৃদ্ধির উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছেন। ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন তিনি।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০২২ সালের দুর্বল ভিতের কারণে ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান শক্তিশালী দেখাচ্ছে, সেজন্য ২০২৪ সালে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চীন সরকারকে আরও প্রণোদনা দিতে হবে। দেশটির জিডিপির ৩০ শতাংশ জোগান দেওয়া আবাসন খাতের ধীরগতির কারণে অর্থনীতিতে জোয়ার আসছে না।
পিএমআই জরিপে দেখা গেছে, গত মাসে চীনের উৎপাদন খাতের সম্প্রসারণ হয়েছে, নতুন কার্যাদেশের সংখ্যাও বেড়েছে। সেইসঙ্গে রপ্তানির চাহিদাও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশটির রপ্তানির নতুন কার্যাদেশ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। উৎপাদনের উপকরণের মূল্য কমে যাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যের আত্মবিশ্বাসও অনেকটা বেড়েছে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের পর, যা এখন সর্বোচ্চ।
কাইজিন ইনসাইট গ্রুপের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ওয়াং ঝে রয়টার্সকে বলেছেন, কাঁচামালের দাম কমে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেকটা কমেছে; এর মধ্য দিয়ে দাম কমানো ও বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরির বাস্তবতা সৃষ্টি হয়েছে। তা সত্ত্বেও কোম্পানিগুলো নতুন কর্মী নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে সন্দিহান। এছাড়া সংশ্লিষ্ট উপসূচকগুলো গত বছরের আগস্ট মাসের পর থেকে নেতিবাচক রয়েছে।