মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের দমনে যুদ্ধাপরাধ করছে জান্তা: অ্যামনেস্টি
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
ডেস্ক রিপোর্ট:
সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এমনকি জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের দমনে নিষিদ্ধ গুচ্ছ বোমার মতো অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
বৃহস্পতিবার মিয়ানমার জান্তার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ খতিয়ে দেখতে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর বর্তমান সময়েই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে মিয়ানমার জান্তা সরকার। চীন সীমান্তবর্তী শান রাজ্য ও পশ্চিম রাখাইন রাজ্যের সেনা ফাঁড়িগুলোতে জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর জোটের সমন্বিত হামলার মুখে পড়ছে সামরিক বাহিনী।
চলতি মাসের শুরুর দিকে জান্তা সরকার শান রাজ্যের বিমান হামলায় গুচ্ছ বোমা ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটির অস্ত্র তদন্তকারীদের বিশ্লেষণে এই বোমা ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়।
তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এর একটি গোষ্ঠী তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) বলেছে, ওই বিমান হামলায় একজন স্থানীয় বাসিন্দা নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছে।
১০ জন বেসামরিক নাগরিকের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অ্যামনেস্টি বলেছে, রাখাইন রাজ্যের পাউক তাও-তে সাধারণ মানুষরা লুটপাট, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, অমানবিক আচরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস রেসপন্স প্রোগ্রামের পরিচালক ম্যাট ওয়েলস বলেছেন, ‘বেসামরিক নাগরিকদের জন্য বিধ্বংসী পরিণতি ডেকে আনে এমন নির্বিচার হামলা চালানোর রক্তক্ষয়ী ইতিহাস মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আছে। আর সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বড় ধরনের হামলার যে নৃশংস জবাব সেনাবাহিনী দিচ্ছে, সেটিও তারা করছে তাদের দীর্ঘদিনের নির্দিষ্ট ধাঁচেই।’
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত অক্টোবরের শেষ দিকে মিয়ানমারের লড়াই শুরুর পর ৩ লাখের বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে। আর সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২০ লাখের বেশি মানুষ।
সামরিক বাহিনীর নির্বিচার দমনাভিযানের কারণে মিয়ানমারে প্রতিরোধ আন্দোলন জোরদার হচ্ছে ও জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াইয়ের মাত্রাও বাড়ছে।
মিয়ানমার জান্তার বিরুদ্ধে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তার আগেই মিয়ানমারের বিদ্রোহী জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ এক বিবৃতিতে বলেছিল, সেনাবাহিনী নিয়মিতই বেসামরিক নাগরিকদেরকে হুমকি দিচ্ছে। তাদেরকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করছে, মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার ও নির্যাতন করছে।