মিরপুরে পুলিশ-অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষ, ডেমরায় সড়ক অবরোধ

প্রকাশিত: ৪:৫৩ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০২৪

মোঃ সাইফুল ইসলামঃ 

অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন চালকেরা। চার ঘণ্টা অবরোধের পর দুপুরে দিকে পুলিশ বাস চলাচল শুরুর অনুমতি দিলে অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় বিক্ষুব্ধ অটোরিকশা চালকরা তিনটি বাস ভাঙচুর করেছে। এদিকে সকাল থেকে রাজধানীর ডেমরায় অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচলের দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে চালকরা।

রোববার (১৯ মে) বেলা আড়াইটার দিকে মিরপুর-১০ ও ডেমরার এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। মিরপুরের বিভিন্ন সড়ক দিয়ে থেমে থেমে যান চলাচল শুরু করলেও তবে এ এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর পৌনে ৩টার দিকে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় আসেন ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা। তিনি আন্দোলনকারীদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন এবং অটোরিকশা চলাচলের বিষয়ে আলোচনার আশ্বাস দেন। তার আশ্বাসে চালকদের একটি অংশ আন্দোলন শেষ করে ফিরতে সম্মত হয়। তবে শেওড়াপাড়া থেকে আসা শ্রমিকদের একাংশ লাঠি হাতে হই-হুল্লোড় করে এসে আবারও অবরোধ শুরু করে। এসময় পুলিশ তাদের সরে যেতে বললে তারা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় শেওড়াপাড়া দিয়ে মিরপুরের দিকে আসা অটোরিকশা চালকদের একটি অংশ ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে এবং লাঠি নিয়ে পুলিশকে ধাওয়া দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশও পাল্টা ধাওয়া দেয়। বিকেল ৩টা ২০ মিনিটের দিকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপরই মিরপুরের বিভিন্ন সড়ক দিয়ে থেমে থেমে যান চলাচল শুরু করে।

ডেমরায় ঘটনাস্থলে এ বিষয়ে চালকরা বলেন, অটোরিকশা যদি অবৈধ হয় তাহলে আমদানি করার অনুমোদন সরকারিভাবে কেন দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এসব রিকশা আমরা কিস্তির মাধ্যমে ঋণ করে কিনেছি। বেশিরভাগ চালক ভাড়ায় রিকশা চালিয়ে সংসার চালায়। এখন অটোরিকশা বন্ধ করে দিলে কীভাবে সংসার চলবে। কীভাবেই বা আমরা কিস্তির ঋণ পরিশোধ করব। পাশাপাশি অটোরিকশা বন্ধ হলে বাঁচার জন্য আমাদের চুরি-ছিনতাই ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না। এক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়ে অটোরিকশা বন্ধ করলে আমাদের আপত্তি নেই।

সম্প্রতি বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকায় কোনো ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানো যাবে না। এ বিষয়ে শুধু নিষেধাজ্ঞা আরোপ নয়, এগুলো চলতে যেন না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ২২ মহাসড়কে রিকশা ও ইজিবাইক নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করুন।’

বিআরটিএ জানায়, ব্যাটারি অথবা মোটরচালিত রিকশা বা ভ্যান বা অনুরূপ শ্রেণির থ্রি-হুইলারএর কারণে ঢাকা মহানগরীতে সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ফিটনেসের অনুপযোগী, রংচটা, জরাজীর্ণ ও লক্কড়-ঝক্কড় মোটরযান চালানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ গণ্য করে ঢাকাতে ফিটনেসবিহীন অটরিকশা বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যথায় এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।