মেহেরপুর প্রতিনিধি:
মেহেরপুরে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২৪ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গা ও রাজবাড়ি জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, ডাকাত দলের সর্দার আলতাফ মন্ডল (৫৩), রমজান আলী (৪৩) ও আসাদুল ইসলাম (৩৪)।
তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্র, ডাকাতিতে ব্যবহৃত পোশাকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম।
পুলিশ সুপার জানান, ২ নভেম্বর রাত সাড়ে ৩টার দিকে ডাকাত দলের সর্দার আলতাফ হোসেন তার সদস্যদের নিয়ে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে ড্রামট্রাক, আলমসাধু, হানিফ পরিবহনসহ অন্যান্য যানবাহনের গতিরোধ করে। গাড়ির চালক, হেলপার ও সাধারণ যাত্রীদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা লুট করে নেয়। এছাড়া ড্রাম ট্রাকের একজন ড্রাইভার এবং একজন হেলপারকে হাসুয়া দিয়ে (দেশীয় অস্ত্র) কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাতের বিরুদ্ধে গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এর আগেও ডাকাত দলের সদস্যরা দূরপাল্লার পরিবহনের চালকদের জিম্মি করে নগদ অর্থ লুট নেয়। ঘটনার পর থেকেই মামলার মূল রহস্য উদঘাটনে অভিযানে নামে গাংনী থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা শাখা ও সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল মামলার মূল রহস্য উৎঘাটন করতে সক্ষম হয়।
৫ নভেম্বর জেলা গোয়েন্দা শাখা ও সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের আরো একটি যৌথ অভিযানে ডাকাত দলের সর্দার আলতাফ মন্ডলকে রাজবাড়ি জেলার পাংশা থানার সেনপাড়া কালিতলা বাজার হতে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে নগদ ৭০০ টাকা ও তার ব্যবহৃত মুঠোফোন জব্দ করা হয়। তার বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় ৮টি ডাকাতি মামলা ও একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে।
৬ নভেম্বর জেলা গোয়েন্দা শাখা এবং সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের দলটি অভিযান চালায় চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থানার বড়বোয়ালিয়া গ্রামে। পরে ওই গ্রাম থেকে রমজান ডাকাত ও আসাদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। রমজানের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি মামলা ও একটি চুরির মামলা রয়েছে। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। আসামিরা আদালতে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ডাকাতি ও ছিনতাইরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি টহল জোরদার করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট ও লাইটের ব্যবস্থা করতে পারলে অপরাধ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলেও তিনি জানান।