মোদির মন্ত্রিসভায় সবচেয়ে ধনী সদস্য তিনি, সম্পত্তি কত জানেন?
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতে সরকার গঠন করেছে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি। এবার একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনে শরিকদের উপর নির্ভর করতে হয়েছে। মন্ত্রিত্বও ভাগাভাগি করতে হয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যায় মোদীসহ ৭২ জন সাংসদ রাষ্ট্রপতি ভবনে মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন।
মন্ত্রিসভার বিশাল বহরে ৩০ জন পূর্ণমন্ত্রী, বাকিরা কেউ প্রতিমন্ত্রী, কেউ আবার স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে এক জনকে নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। তিনি নতুন মন্ত্রিসভার সবচেয়ে ধনী সদস্য। নাম চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি। অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টু লোকসভা কেন্দ্র থেকে এবার তেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) টিকিটে লড়েছিলেন তিনি। প্রায় সাড়ে তিন লাখ ভোটে হারিয়েছেন জগন্মোহন রেড্ডির দল ওয়াইএসআরসিপি-র প্রার্থী কিলারি ভেঙ্কটা রোয়াইয়াকে।
গুন্টুরের বাসিন্দা চন্দ্রশেখর। সেখানকার বুরিপালেম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ৪৮ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ পেশায় চিকিৎসক। ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিবিএস পাশ করেন চন্দ্রশেখর। তার পর বিদেশে পাড়ি দেন তিনি।
জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি এবং লিনাইল হাসপাতালে পাঁচ বছর প্র্যাকটিস করেছেন তিনি। এ ছাড়াও ডাক্তারি পড়ুয়াদের পড়াতেন তিনি। পাশাপাশি অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মও তৈরি করেছিলেন চন্দ্রশেখর। নাম ‘ইউ ওয়ার্ল্ড’। বর্তমানে সেই সংস্থার সিইও তিনি।
আমেরিকাতে থাকতেই সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন চন্দ্রশেখর। তার পরিবার বরাবরই চন্দ্রবাবু নায়ডুর দলের সমর্থক। টিডিপি এনআরআই সেলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন তিনি। আমেরিকায় বিভিন্ন দলীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করতেন চন্দ্রশেখর।
২০২০ সালে আমেরিকায় থাকাকালীন তরুণ উদ্যোক্তা হিসাবে পুরস্কার জেতেন। ‘আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং’ অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। এ ছাড়াও পেন্নাসানি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন চন্দ্রশেখর। বিভিন্ন স্বাস্থ্য শিবির আয়োজন করে এই ফাউন্ডেশন।
২০১৪ সাল থেকে গুন্টুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন জয় গাল্লা। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আচমকাই তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেন। তার ছেড়ে যাওয়া আসনে টিডিপি প্রার্থী করে চন্দ্রশেখরকে।
চন্দ্রশেখরের সম্পত্তি কত জানেন?
চন্দ্রশেখরের সম্পত্তির পরিমাণ পাঁচ হাজার ৭০০ কোটি ভারতীয় রুপি। ভোটাধিকার সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্রেটিক রিফর্মস বা এডিআর-এর দেওয়া দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চন্দ্রশেখরই দেশের ধনীতম মন্ত্রী।
এডিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আট হাজার ৩৬০ জন প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি রয়েছে চন্দ্রশেখরেরই।
নিজের সম্পত্তির পাশাপাশি পারিবারিক সম্পত্তিও রয়েছে চন্দ্রশেখরের। সেই কারণেই অন্য সাংসদদের তুলনায় আর্থিক দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে চন্দ্রশেখর।
এডিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে ৯৩ শতাংশই কোটিপতি। যা ২০১৯ সালের তুলনায় দ্বিগুণের থেকেও বেশি। সেবার কোটিপতি সাংসদদের হার ছিল ৪৪ শতাংশ।
এদিকে এবারের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। সরকার গঠনে ২৭২ আসন প্রয়োজন হলেও বিজেপি পায় ২৪০ আসন। তাই নতুন সরকার গড়তে মোদি-শাহদের নির্ভর করতে হয়েছে এনডিএ-র শরিকদের উপর। এনডিএ-র অন্যতম শরিক দল টিডিপি এ বারের লোকসভা নির্বাচনে ১৬টি আসন পেয়েছে। চন্দ্রবাবু নায়ডুর এ দল থেকে মোদির মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন দুই সাংসদ। এক জন পূর্ণমন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী। টিডিপি নেতা কে রামমোহন নায়ডু মন্ত্রী হয়েছেন তৃতীয় মোদি সরকারের মন্ত্রিসভায়। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন তিনি। এছাড়াও মোদির মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়া চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন।