যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল পানীয় জলের তীব্র সংকটে রোগীরা

প্রকাশিত: ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি,যশোরঃ 

তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেলেও যশোরের প্রধান চিকিত্সাসেবা কেন্দ্র ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পানির জন্য হাহাকার লেগেই আছে। এখানকার ১০টি টিউবওয়েলের মধ্যে আটটিই নষ্ট হওয়ায় ‘প্রায় পানিশূন্য’ হয়ে পড়েছে হাসপাতালটি। দুটি টিউবওয়েল সচল থাকলেও পানিতে গন্ধ থাকায় রোগীরা পান করতে পারছেন না। ফলে হাসপাতাল জুড়ে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে এখানে প্রতিদিন দুই থেকে তিন শতাধিক রোগী ভর্তি হন। প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ রোগী ও হাজারের বেশি স্বজন হাসপাতালে অবস্থান করেন। বহির্বিভাগেও প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ২ হাজার রোগী সেবা নিয়ে থাকেন। এ বিশালসংখ্যক রোগী ও স্বজনদের বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে হাসপাতালে স্থাপন করা হয় ১০টি টিউবওয়েল। এর মধ্যে আটটি টিউবওয়েলই পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে দুটি টিউবওয়েল সচল ধাকলেও পানিতে দুর্গন্ধ থাকায় পান করার উপযোগী নয়। এছাড়া হাসপাতালের দুটি গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি ১৭টি ট্যাংকে জমা হয়। ট্যাংক পরিষ্কার করা হয় না বলে সাধারণত এ পানি কেউ পান করে না। শুধুমাত্র টয়লেটের কাজে ব্যবহার হচ্ছে।

ইতিপূর্বে রোটারি ক্লাবের অর্থে হাসপাতালের চারটি স্থানে আর্সেনিকমুক্ত খাবার পানির ব্যবস্থা করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। কোনো কোনো মেশিনের যন্ত্রাংশও চুরি হয়ে গেছে। করোনাকালে বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য জাইকার স্থাপন করা দুটি সাবমার্সিবেল পাম্পও নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে হাসপাতালের প্রধান গেটের সামনে পৌরসভার সাবমার্সেবল পাম্পের ওপর নির্ভর করছে রোগীর স্বজনরা। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে খাওয়ার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতালের পাইপ লাইনে যে পানি আসছে, তাতে ময়লা ও পোকা থাকায় তা পানের অযোগ্য। এরপরও ঐ পানি দিয়ে থালাবাটি ধোয়ার কাজ করছেন তারা। সদর উপজেলার বাহদুরপুর গ্রামের রেশমা পারভিন বলেন, ‘আমার ছয় মাস বয়সি মেয়ে সাদিয়াকে নিয়ে বুধবার থেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। হাসপাতালের বিশুদ্ধ পানির টিউবওয়েল নষ্ট থাকায় রাতে পানি সংগ্রহ করতে পারিনি। ভোরে হাসপাতালের প্রধান গেটে গিয়ে এক বোতল পানি সংগ্রহ করতে হয়েছে। এভাবে সকল রোগীই পানি সংকটে রয়েছেন।’ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, পানির সমস্যা রয়েছে। আমরা বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগকে জানিয়েছিলাম। তারাও চেষ্টা করেছে। কিন্তু পানির লেয়ার এত নিচে যে কাজ হয়নি। তবে হাসপাতালের প্রধান গেটের সামনে পৌরসভার সাবমার্সিবেল পাম্পের পানি দিয়ে রোগীদের কাজ চলে যাচ্ছে।