যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসানীতি নির্বাচন কমিশনের বিষয় না : ইসি আনিছুর
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
গাজীপুর প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসানীতি নির্বাচন কমিশনের বিষয় নয় বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এগুলো সরকার টু সরকারের বিষয়। আমাদের বিষয় না। নির্বাচন কমিশন সংবিধানের মধ্যে থেকে কাজ করবে।
সংবিধান আমাদের যে ক্ষমতা দিয়েছে, অন্যান্য আইন যে ক্ষমতা দিয়েছে সেটা আমরা প্রয়োগ করব।’
আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে উন্নত মানের জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্ট কার্ড) বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ভোটগ্রহণ পদ্ধতি নিয়ে ইসি মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘এবার ভোটগ্রহণ হবে কাগজের ব্যালটে। আমরা প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম অর্ধেক আসনে ইভিএমের (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) মাধ্যমে ভোট নেওয়ার।
কিন্তু ইভিএমের স্বল্পতা বা এই সময়ের মধ্যে ইভিএম মেশিন সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। তাই আমরা কাগজের ব্যালটে ভোট করব।’
এবার ভোটগ্রহণের দিন সকালবেলা কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছনো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভোটগ্রহণের জন্য এবার নতুন একটি ব্যবস্থায় যাচ্ছি। ভোটগ্রহণের দিন সকালবেলা কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছনো হবে।
অতীতে ব্যালট পেপার আগেই কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা হতো। সে কারণে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল, চরাঞ্চল ও দ্বীপাঞ্চলগুলো বাদে অন্য সব কেন্দ্রে এই ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে।’
কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন হবে প্রায় ৪২ হাজার ১০৩টি কেন্দ্রে।
বুথ থাকবে দুই লক্ষাধিক। এত বিশাল পরিমাণ কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন সম্ভব হলেও একটি প্রতিষ্ঠান এত ক্যামেরা দিতে পারবে না। এ জন্য একাধিক প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া এগুলোকে মনিটরিং করা অত্যন্ত দুরূহ। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচনে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবহার আমরা আর না-ও করতে পারি।’
নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি নির্বাচন ব্যবস্থাপনা অ্যাপ তৈরি করছি। আগামী নির্বাচনের আগেই কিছু তথ্য পরীক্ষামূলকভাবে আপলোড করতে পারব। নভেম্বরে তফসিল ঘোষণার সাথে সাথেই এই অ্যাপের মাধ্যমে অনেক তথ্য জানা যাবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনার (উপস্থিত দর্শক) ভোটকেন্দ্র ও ভোটকেন্দ্রের সকল তথ্য ঘরে বসে জানতে পারবেন। প্রতি ঘণ্টায় আপনার কেন্দ্রে কত ভোট কাস্ট হলো তাও জানতে পারবেন। কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলও জানা যাবে।’
নির্বাচন কমিশন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ফ্রি, ফেয়ার ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চাই। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আমরা ফিল্ড তৈরি করে দেব, রাজনৈতিক দলগুলোর আগ্রহ থাকতে হবে। তারা অংশ নিলেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে জোর করে অংশগ্রহণ করাতে পারব না। শুরু থেকেই সকল রাজনৈতিক দলকে আমরা আহ্বান করেছিলাম। আমরা সংলাপে বসেছিলাম। কেউ কেউ আমাদের সংলাপে আসেনি। কেউ কেউ আমাদের এখনো মানেনি। আমরা তাদেরকে বারবার পত্র দিয়ে আহ্বান জানিয়েছি। আমরা আহ্বান সব সময় করে যাচ্ছি। আমাদের দরজা তাদের জন্য সব সময় খোলা। সবার সাথে আলোচনা করতে রাজি আছি। সংবিধানের মাধ্যমে আমাদের যতটুকু ক্ষমতা দেওয়া আছে, তার মধ্য থেকে সব কিছু করব।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনু বিভাগের (গ্রেড ১) মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ুন কবীর, প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম, ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ।