যুক্তরাষ্ট্র আবিষ্কারে নামবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:১৩ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক রিপোর্টঃ

প্রায় দুশো বছর আগে ক্রিকেটের চর্চা শুরু হলেও কোনো দিনই ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ হয়ে উঠতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। অভিবাসীদের হাত ধরে দেশটিতে ক্রিকেটের যে নবযাত্রা, তারও খুব একটা প্রসার ঘটেনি। আইসিসি ক্রিকেটের বিশ্বায়নের উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশকে যুক্ত করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে যৌথভাবে টি২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ দিয়ে।

এই বিশ্বকাপই বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংযোগ ঘটিয়েছে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে। টেক্সাসের হিউসটনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সে মিশন শুরু হতে দেরি নেই। ঢাকার সময় আজ রাত ন’টায় তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি২০ খেলতে নামবে দেশ দুটি। যেখানে অভিবাসী দলের বিপক্ষে নিরঙ্কুশ ফেভারিট বাংলাদেশ।সামর্থ্যে বা সক্ষমতায় পিছিয়ে থাকলেও ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পরিচয় বহু আগে, অষ্টাদশ শতকে। কালের পরিক্রমায় দেশটি থেকে অন্তরালে চলে যাওয়া ক্রিকেটকে নতুন করে ময়দানে নিয়ে এসেছে অভিবাসীরা। দেশটিতে ক্রিকেটের পেশাদার রূপ দেওয়ারও চেষ্টা করা হচ্ছে জোরেশোরে।

টি২০ ক্রিকেটের বৈশ্বিক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কারণে এতদিন তারা ম্যাচ ও সিরিজ খেলেছে কানাডা, বারমুডা, নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে। এই তালিকায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। টেস্ট খেলুড়ে দ্বিতীয় দলের বিপক্ষে টি২০ হোম সিরিজ খেলছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২১ সালে ফ্লোরিডায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ খেলে ড্র করেছিল ১-১ ব্যবধানে। বিশ্বকাপের আয়োজক হলেও এ বছর খুব বেশি আন্তর্জাতিক টি২০ খেলা হয়নি দেশটির।

এই প্রেইরি ভিউ কমপ্লেক্সেই গত এপ্রিলে কানাডার সঙ্গে চার ম্যাচের সিরিজ খেলে জিতেছিল সব কটি। রেকর্ডবুকে লিপিবদ্ধ থাকা ২০২৪ সালে চারটি আন্তর্জাতিক টি২০ খেলা যুক্তরাষ্ট্র আজ কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমাতে পারবে, সেটা বড় প্রশ্ন। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা যে ভালো হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ খেলার উদ্দেশ্য বিশ্বকাপের ভেন্যুতে মানিয়ে নেওয়া। দল হিসেবে গুছিয়ে নেওয়া। সেদিক থেকে নাজমুল হোসেন শান্তদের জন্য এই সিরিজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছন্দে না থাকা ব্যাটারদের রানে ফেরার জন্য উপযুক্ত মঞ্চ। তানজিদ হাসান তামিদের সঙ্গে লিটন কুমার দাস বা সৌম্য সরকারের ওপেনিং জুটি প্রতিষ্ঠিত করা কোচের প্রথম লক্ষ্য। তাই শান্ত, লিটনদের ফ্রি লাইসেন্স দেওয়া হতে পারে।

এই সিরিজ দিয়ে বিশ্বকাপ দলের ব্যাটিং লাইনআপ ঠিক করার মোক্ষম সুযোগ। অর্থাৎ ব্যাটিং অর্ডার সাজাতে চেষ্টা করবেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। বিশ্বকাপ দল ঘোষণার আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে ব্যাটারদের দুর্বলতা প্রবলভাবে প্রকাশ পেয়েছে। টপঅর্ডার ধারাবাহিক হতে পারেনি। মিডল অর্ডারে রান পেলেও টি২০র স্ট্রাইকরেট ছিল না।

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার যেটাকে বড় দুর্বলতা মনে করছেন। তিনি বলেন, বিশ্বকাপ ভালো করতে হলে বাংলাদেশের ব্যাটারদের ধারাবাহিক হতে হবে। টপঅর্ডার ব্যাটারদের রান করতে হবে ১৪০ স্ট্রাইকরেটে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তারই মহড়া দেবে দল।

ব্যাটারদের গুছিয়ে নেওয়ার সিরিজে বোলারদেরও পরীক্ষা। পেস এবং স্পিনের সমন্বয়ে নিয়ন্ত্রিত বোলিং ফোকাস করা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে স্পিন বিভাগে লিড দেবেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। পেস বিভাগের নেতৃত্বে থাকছেন মুস্তাফিজুর রহমান। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো যুক্তরাষ্ট্রের জল-হাওয়ায় মানিয়ে নেওয়া এবং ম্যাচ প্র্যাকটিস করতেই স্বাগতিকদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলার উদ্যোগ নেওয়া।